ভ্রমণ
পৃথিবীর অদ্ভুত পাঁচটি রেষ্টুরেন্ট

স্বভাবগত ভাবেই মানুষ ভোজনবিলাসি। আর আড্ডামুখর পরিবেশে বন্ধু বা পরিবারের সাথে খাওয়া দাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান রেষ্টুরেন্ট। আর সেই রেষ্টুরেন্টগুলো যদি হয় একটু আলাদা মানের যা পৃথিবীর খুব কম স্থানেই দেখা যায়। তাহলে বিষয়টি আসলেই মজার। চলুন জেনে নিই আজ সেইরূপ পাঁচটি অদ্ভুত রেষ্টুরেন্ট সম্পর্কে :
Buns and Guns restaurant – এই রেস্টুরেন্ট টি লেবাননে অবস্থিত। এই রেস্টুরেন্টের বিশেষত্ব হলো এটিকে একটি মিলিটারী ক্যাম্পের মত করে তৈরি করা হয়েছে। এই রেস্টুরেন্টের প্রতিটা জায়গায় বন্দুক ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এই রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদের হাতে ও বন্দুক থাকে। এই রেস্টুরেন্টের খাবারের নামগুলোও বুলেট ও বন্দুকের নামে রাখা হয়ছে।
Waterfalls restaurant – ফিলিপাইনের রাজধানী ভ্যালা এস্কুডিওরোর আশ্রয়স্থল উদ্যানের মাঝখানে অবস্থিত, জলপ্রপাতের রেস্টুরেন্টটি একটি নোয়া-জুতা নীতির কথা বলে, কারণ এটি একটি ছোট নদী এবং জলপ্রপাতের মাঝখানে অবস্থিত। বাঁশের টেবিল এবং পানিতে ভিজে স্টেশনগুলি রান্না করে একটি ছোট জলপ্রপাতের ভেতর থেকে মাত্র ফুটে বসে থাকে, যার ফলে নগরা নগ্নপদে খাবার পর পর অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও অতিথিরা ঝাঁকুনি খেয়ে জলের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
Sushi Naked restaurant – এই রেস্টুরেন্ট টি কানাডা, আমেরিকা এবং চায়নাতে অবস্থিত। এই রেস্টুরেন্টের জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি যে এখান যেতে হলে ৬ মাস আগ থেকে বুকিং দিয়ে রাখতে হয়। এই রেস্টুরেন্টে খাবার প্লেটে করে সার্ভ করা হয়না। একটি Naked মেয়ের শরীরের উপরে সাজিয়ে দেওয়া হয়। আর সেখান থেকে তুলে খাবার খেতে হয়। যা শুনতে খারাপ লাগলেও মানুষ সেখানে যেতেই লাইন লাগিয়ে দেয়।
Naked restaurant – Naked শব্দটা শোনার পর হয়ত অনেকে এই রেস্টুরেন্ট আছে বলে বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু এটা সত্যি যে, Naked রেস্টুরেন্ট আছে। লন্ডনে তৈরি করা হয়েছে এটি। এই রেস্টুরেন্টে কর্মচারী থেকে শুরু করে সবাই নগ্ন অবস্থায় থাকে। এই রেস্টুরেন্টে কোনো ইলেকট্রসিটি নেই। কাঁচের তৈরি কোনো জিনিস নেই। সব কাঠের তৈরি। খাবার সার্ভ করা হয় মাটির তৈরি প্লেটে। এই রেস্টুরেন্টের ওয়েবসাইটে ৫০ হাজার মানুষ আগ থেকেই সিট বুকিং করে রেখেছে। এবং অনেক মানুষ ওয়েটিং লিস্ট হয়েছে। Twin star restaurant – এটা রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থিত। এটি এমন একটি রেস্টুরেন্ট, যেখানে ওয়েটার থেকে শুরু করে সিকিউরিটি গার্ড পর্যন্ত সবাই জমজ। এই রেস্টুরেন্টে শুধু জমজদেরই কাজ দেয়া হয়। এই রেস্টুরেন্টে সকল কর্মচারী জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে। সমস্ত রাশিয়া থেকে এই জমজ খুঁজে বের করা হয় এখানে কাজ দেয়ার জন্য এবং তাদের অধিক মাত্রায় বেতন দেয়া হয়।
বিনোদন
পাপের শহর লাস ভেগাস

লাস ভেগাস শহরটি বিশ্বে বিনোদনের রাজধানী হিসাবে পরিচিত।ক্যাসিনো,মদ,জুয়া,নারী কি নেই সেখানে? বিশ্বের অন্য যে কোনও শহরের চেয়ে বেশি ফাইভ স্টার হোটেল রয়েছে এই শহরে। বর্তমানে লাস ভেগাস বিশ্বের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। বহু ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক বিনোদনের জন্য শহরটি “পাপের নগরী” উপাধি অর্জন করেছে। চলুন পাপের শহর লাস ভেগাস সম্পর্কে আজ বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক
লাস ভেগাসে ১৯০৫ সালে বসতি স্থাপন করা হয় এবং ১৯১১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সেটিকে সৃকৃতি দেওয়া হয়। বিশ শতকের শেষের দিকে এটি উক্ত আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল শহর হয়ে ওঠে।
যাযাবর পালেও-ইন্ডিয়ানরা ১০,০০০ বছর আগে লাস ভেগাসে এলাকা ভ্রমণ করে। আনাসাজি ও পাইউতে উপজাতিরা কমপক্ষে ২ হাজার বছর আগে এই এলাকায় উপস্থিত হয়।
১৮২৯ সালে উপত্যকায় উপস্থিত হওয়া প্রথম অ-নেটিভ আমেরিকান হিসাবে কৃতিত্ব পেয়েছে রাফায়েল রিভেরা নামের এক তরুণ মেক্সিকান স্কাউট। ব্যবসায়ী আন্তোনিও আরমিজো ১৮২৯ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত স্পেনীয় পথচিহ্ন ধরে ৬০-সদস্যের একটি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এই অঞ্চলটির নামকরণ করা হয়েছিল লাস ভেগাস, স্প্যানিশ ভাষায় এর অর্থ “তৃণভূমি”। কারণ এলাকাটিতে প্রচুর বন্য ঘাস জন্মাতো এবং প্রয়োজনীয় ঝর্ণার পানি ছিল।
লাস ভেগাস মোজভা মরুভূমির একটি অববাহিকায় অবস্থিত,এবং চারপাশে পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত। মরুভূমি গাছপালা ও বন্যপ্রাণীর সাথে ভূদৃশ্য বেশিরভাগটাই পাথুরে ও শুষ্ক।
লাস ভেগাসের অর্থনীতির প্রাথমিক চালিকা শক্তি হল হল পর্যটন, খেলাধুলা ও সম্মেলন। উক্ত শিল্প খাতগুলি ও রেস্তোঁরা শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে।
লাস ভেগাসের প্রধান আকর্ষণগুলি হল ক্যাসিনো এবং হোটেলগুলি।
ডাউনটাউন অঞ্চলের বেশিরভাগ ক্যাসিনো ফ্রেমন্ট স্ট্রিটে অবস্থিত। রাত নামলেই যেন সক্রিয় হয় এই নগরী।
ক্যাসিনো,মদ, জুয়া,নারী সবই হাতের কাছে। পাপের সকল উপাদান গুলো যেন ছেয়ে থাকে শহর জুড়ে।
আন্তর্জাতিক
কেমন দেশ গ্রীনল্যান্ড

আটলান্টিক মহাসাগর ও আর্কটিক মহাসাগরের মধ্যবর্তীতে গ্রীনল্যান্ডের অবস্থান। যদিও টেকনিক্যালি এটি নর্থ আমেরিকান মহাদেশের একটি দেশ। ইতোপূর্বে এটি জড়িত ছিলো ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে। ডেনমার্ক, নরওয়ের মতোই একটি ইউরোপীয় দেশ ছিলো গ্রীনল্যান্ড। ডেনমার্ক রাজ্যে গ্রীনল্যান্ড এখন একটি স্বাধীন অঞ্চল। যদিও অর্থনৈতিক খাদে গ্রীনল্যান্ড অনেকটাই জড়িত ডেনমার্কের উপর তাদের বিভিন্ন পারিবারিক পণ্যের কারণে। বৈশিষ্ট্যসূচকভাবে গ্রীনল্যান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপ। এর ক্ষেত্রফল প্রায় ৮ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩০ স্কয়ার মাইল।
কিলোমিটার হিসেবে যেটি প্রায় ২ কোটি ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৬ স্কয়ার কিলোমিটার। এতো বিশাল একটি দেশ হলেও এর জনসংখ্যা এর তুলনায় নিতান্তই অনেক কম। সম্প্রতি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ১৮৬ জন। বিশাল এই দ্বীপের কোণায় কোণায় ভীড় জমিয়ে আছে হাতে গোনা অল্প কিছু জনসংখ্যা। গ্রীনল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর নুক। যেটিকে গ্রীনল্যান্ডের রাজধানী স্বীকার করা হয়। ২০১৭ সালের রিসার্চ অনুযায়ী নুক শহরের জনসংখ্যা মাত্র ১৭ হাজার ৩৬ জন। বিশাল দ্বীপের এই ছোট্ট নগরীকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট রাজধানী। গ্রীনল্যান্ডের শহরগুলো তটরেখা বরাবর মাত্র ২৭ হাজার ৩৯৪ মাইল জুড়ে অবস্থিত। কারণ এইটুকু পরিমাণ জায়গাই এই দ্বীপে বরফ আবৃতহীন স্থান।
গ্রীনল্যান্ডের বেশিরভাগ নগরীই গড়ে উঠেছে পশ্চিম উপকূলবর্তী হয়ে। কারণ এর উত্তর পূর্ব কূল বরাবর গ্রীনল্যান্ড জাতীয় পার্ক অন্তর্ভুক্ত। ধারণা করা হয়, সেই প্রাগৈতিহাসিক কালে পালেও ইস্কিমো গ্রুপের সময় থেকে গ্রীনল্যান্ড বাসযোগ্য আছে। তবে সঠিক গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, ইনুইটরা সর্বপ্রথম গ্রীনল্যান্ডে প্রবেশ করে ২৫০০ খ্রীস্টপূর্বে। অর্থাৎ, গ্রীনল্যান্ডের ইতিহাস বেশ পুরানো আর প্রত্নতাত্ত্বিক এবং পরবর্তী বহু বছর পর এখানে ইউরোপিয়ানরা বসবাস শুরু করে৷ কখনো নরওয়েজিয়ান ও আইসল্যান্ড বাসিন্দারা এর পশ্চিম উপকূলবর্তী হয়ে বাস শুরু করে। তখন থেকেই আদিম গ্রীনল্যান্ডের যাত্রা।
তাই গ্রীনল্যান্ডের প্রথম বাসিন্দারা নরওয়েজিয়ান গ্রীনল্যাণ্ডারস নামে পরিচিত। ১৩ শতাব্দীর শুরুর দিকে এটি নরওয়েদের অধীনে চলে যায় এবং ঠিক একই বছর নরওয়েবাসীরা ডেনমার্কের সঙ্গে চুক্তি স্বরূপ গ্রীনল্যান্ডের উপর অধিকার খাটাতে থাকে। ১৯৪৬ সালের দিকে ইউনাইটেড স্টেটস ডেনমার্ক থেকে মোটা অঙ্গের টাকার বিনিময়ে কেউ গ্রীনল্যান্ড আইল্যান্ডটি কিনতে মরিয়া হয়ে উঠে কিন্তু ডেনমার্ক সরকার এই বৃহৎ আইল্যান্ড খোয়াতে রাজি হয়নি। ১৯৫৩ সালের দিকে দ্বীপটি কিংডম অব ডেনমার্কের অফিশিয়াল একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ১৯৭৯ সালের দিকে ডেনমার্ক পার্লামেন্ট গ্রীনল্যান্ড দ্বীপকে পূর্ণ শাসন করার অনুমতি দেয়৷
তবে ২০০৮ সালের গণভোটে গ্রীনল্যান্ড স্বাধীনতা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে জয়ী হয় এবং পরবর্তী এক বছরের মাথায় ২০০৯ সালে গ্রীনল্যান্ডবাসীরা নিজ সরকার নিজে গঠন করে। তাদের নিয়ম কানুন, রীতিনীতি, সংস্কৃতি নিজেদের মতো তৈরি করে নেয়। তারা ভিন্ন সংস্কৃতির স্বাধীন দেশের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। যদিও ডেনমার্ক রাষ্ট্র গ্রীনল্যান্ডের প্রতিরক্ষা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছিলো। বর্তমানে গ্রীনল্যান্ডের হেড অব স্টেট ডেনমার্কের রাণী মার্গেরেথ। তবে এর প্রধানমন্ত্রী কিম কিলসেন, যিনি এ দেশের সরকার প্রধান হিসেবে এককভাবে কাজ করে।
উচ্চ অক্ষাংশের কারণে দেশটি খুবই ঠাণ্ডাপ্রবণ এলাকা। এর গ্রীষ্ম বা শীত সর্বদাই বরফ পড়তে থাকে। গ্রীনল্যান্ডের রাজধানী নুক এ গ্রীষ্মের তাপমাত্রা থাকে মাত্র ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এবং শীতকালে সাধারণ তাপমাত্রাতেই থাকে-১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শীতের প্রখরতায় এটি আরো কমতে থাকে। অতিরিক্ত শীতের কারণে দেশটি কৃষিকাজ খুব স্বল্প পরিমাণে হয়। তারা বেশিরভাগ নির্ভর করে গ্রীনহাউজের শাকসবজি চাষ, মাছ চাষের উপর। কিন্তু বছরের বেশিরভাগ সময় ই এদের অন্যান্য দেশ থেকে আমদানিকৃত খাবার খেয়ে জীবন যাপন করতে হয়। গ্রীনল্যান্ডের ভূসংস্থান বেশিরভাগই সমতল ভূমি। উঁচু ভূমি একদম নেই বললেই চলে। যদিও এর বেশিরভাগ দুই-তৃতীয়াংশ সমতল ভূমিই বরফ দ্বারা আবৃত।
আন্তর্জাতিক
বরফে ঢাকা মহাসাগর : উত্তর মহাসাগর

উত্তর মহাসাগর বা সুমেরু মহাসাগর উত্তর গোলার্ধের সুমেরু অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের ক্ষুদ্রতম এবং সর্বাপেক্ষা কম গভীর একটি মহাসাগর। এটি পৃথিবীর পাঁচটি প্রধান মহাসাগরের অন্যতম। আন্তর্জাতিক জললেখচিত্রন সংস্থা এটিকে মহাসাগরের স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে কোনো কোনো সমুদ্রবিদ এটিকে সুমেরু ভূমধ্যসাগর বা সুমেরু সাগর বলে থাকেন । চলুন উত্তর মহাসাগর সম্পর্কে আজ বিস্তারিত জেনে নেই :
উত্তর মহাসাগরের প্রায় সমগ্র অংশই ইউরেশিয়া ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশ দ্বারা বেষ্টিত। বছরের অধিকাংশ সময় এই মহাসাগরের অংশবিশেষ সামুদ্রিক বরফে ঢাকা থাকে। শীতকালে সম্পূর্ণ মহাসাগরটিই বরফে ঢাকা পড়ে যায়। উত্তর মহাসাগরের তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা ঋতু অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। সমুদ্রের বরফের আবরণীর গলন ও জমাট বাঁধার কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। পাঁচটি প্রধান মহাসাগরের তুলনায় এই মহাসাগরের জলের লবণাক্ততা কম। গ্রীষ্মকালে প্রায় ৫০% বরফ গলে যায়।
ইউরোপের প্রাচীন ইতিহাসে উত্তর মেরু অভিযানের নজির বিশেষ নেই। এই অঞ্চলের ভূগোল সম্পর্কে সঠিক ধারণাও সে যুগে কারো ছিল না।
প্রথম যুগের মানচিত্রকারেরা সঠিকভাবে জানতেন না যে, উত্তর মেরু সংলগ্ন অঞ্চলটি জলভাগ না স্থলভাগ।
সুমেরু বৃত্তের ভিতরে অল্প কয়েকটি অভিযান হলেও, তা কয়েকটি ছোটো দ্বীপেই সীমাবদ্ধ ছিল।
বরফের সঞ্চরণশীল ব্যারিয়ারের ওপারে কী আছে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকায়, এই সম্পর্কে নানারকম গালগল্প ছড়িয়ে পড়ে। ইংল্যান্ড সহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে “মুক্ত মেরু সাগর” ধারণাটি জনপ্রিয়তা পায়। ব্রিটিশ অ্যাডমিরাল্টির দীর্ঘকালের সেকেন্ড সেক্রেটারি জন বারো এই সমুদ্রের সন্ধানে ১৮১৮ থেকে ১৮৪৫ সালের মধ্যে একাধিক মেরু অভিযান প্রেরণ করেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৮৫০-এর ও ১৮৬০-এর দশকে এলিশা কেন ও আইজ্যাক ইজরায়েল হায়েস নামে দুই অভিযাত্রী এই রহস্যময় বিরাট জলভাগ দেখেছেন বলে দাবি করেন।তবে সকল অভিযাত্রীই, যাঁরা মেরু অঞ্চলের দিকে আরও বেশি অগ্রসর হয়েছিলেন, তারা জানান যে মেরু অঞ্চলের বরফের টুপিটি বেশ মোটা এবং তা সারাবছরই বজায় থাকে।
১৯৩৭ সাল নাগাদ সোভিয়েত ও রাশিয়ান মানবচালিত ভাসমান বরফ স্টেশনগুলি উত্তর মহাসাগরের উপর ব্যাপক নজরদারি শুরু করে। এই সব ভাসমান বরফের উপর বৈজ্ঞানিক বসতিও স্থাপিত হয়।
উত্তর মহাসাগর মোটামুটি একটি বৃত্তাকার বেসিন জুড়ে অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ১,৪০,৫৬,০০০ কিমি যা রাশিয়ার প্রায় সম আয়তনবিশিষ্ঠ এর উপকূলরেখার আয়তন ৪৫,৩৯০ কিমি। উত্তর মহাসাগর ইউরেশিয়া, উত্তর আমেরিকা, গ্রিনল্যান্ড এবং একাধিক দ্বীপ দ্বারা বেষ্টিত। এই মহাসাগরের অন্তর্ভুক্ত সাগরগুলি হল বাফিন উপসাগর, ব্যারেন্টস সাগর, বিফোর্ট সাগর, চুকচি সাগর, পূর্ব সাইবেরীয় সাগর, গ্রিনল্যান্ড সাগর, হাডসন উপসাগর, হাডসন প্রণালী, কারা সাগর, ল্যাপটেভ সাগর, শ্বেত সাগর ও অন্যান্য শাখা জলধারা। বেরিং প্রণালী দ্বারা এই মহাসাগর প্রশান্ত মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত। গ্রিনল্যান্ড সাগর ও লাব্রাডর সাগর আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে উত্তর মহাসাগরের সংযোগ রক্ষা করছে।
সমুদ্রগর্ভ
লোমোনোসোভ শৈলশিরা নামে একটি সমুদ্রগর্ভস্থ শৈলশিরা গভীর সমুদ্রের তলায় অবস্থিত উত্তর মেরু সামুদ্রিক অববাহিকাটিকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। একটি হল ইউরেশীয় সামুদ্রিক অববাহিকা; এর গভীরতা ৪,০০০ থেকে ৪,৫০০ মি । অপরটি হল আমেরেশীয় সামুদ্রিক অববাহিকা।এর গভীরতা ৪,০০০ মি। সমুদ্রের তলদেশে অনেক ফল্ট-ব্লক শৈলশিরা, নিতলীয় সমভূমি, খাত ও অববাহিকা দেখা যায়। উত্তর মহাসাগরের গড় গভীরতা ১,০৩৮ মি। এর সর্বোচ্চ গভীরতম বিন্দুটি অবস্থিত ইউরেশীয় অববাহিকায়; এর গভীরতা ৫,৪৫০ মি।
আন্টর্কটিক মহাসাগর থেকে আসা জলের সবচেয়ে বড়ো অন্তঃপ্রবাহটি হল নরওয়েজিয়ান স্রোত। উত্তর মহাসাগরে এই স্রোতটি ইউরেশীয় উপকূল বরাবর প্রবাহিত হয়। প্রশান্ত মহাসাগর থেকেও বেরিং প্রণালী হয়ে জল ঢোকে। পূর্ব গ্রিনল্যান্ড স্রোতটি হল প্রধান বহিঃপ্রবাহ।
সারা বছরই এই মহাসাগরের উপরিতলের অধিকাংশ স্থান বরফে আবৃত থাকে। এর ফলে বায়ুর উষ্ণতাও হিমশীতল হয়। বিষুবরেখার দিকে প্রবাহিত শীতল বায়ুর একটি প্রধান উৎস হল উত্তর মহাসাগর। ৬০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে উষ্ণ বায়ুর সঙ্গে মিলিত হয়ে এই বায়ু বৃষ্টি ও তুষারপাত ঘটায়। মুক্ত অঞ্চলে, বিশেষ করে দক্ষিণ জলভাগে, প্রচুর সামুদ্রিক জীবজন্তু দেখা যায়।
উত্তর মহাসাগরীয় সামুদ্রিক বরফের প্রসার ও গভীরতা এবং বরফের মোট ঘনত্ব বিগত দশকগুলিতে হ্রাস পেয়েছে।
উত্তর মহাসাগর একাধিক উত্তর মেরু মহীসোপান দ্বারা বেষ্টিত। এগুলির মধ্যে সাইবেরীয় মহীসোপানটি বিশ্বের বৃহত্তম মহীসোপান।
-
বিনোদন2 years ago
৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড হবে মাত্র এক সেকেন্ডেই!
-
ইতিহাস3 years ago
রহস্যময়ী ক্লিওপেট্রা
-
আন্তর্জাতিক2 years ago
বিশ্বজুড়ে বিয়ের যত আজব অদ্ভুত রীতিনীতি
-
জাতীয়2 years ago
পাখির গ্রাম ঝিকরাপাড়া (রওনাক ফেরদৌস)
-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি3 years ago
মোবাইল ফোন আসল না নকল বুঝবেন যেভাবে
-
খেলাধুলা2 years ago
প্রথম জয়ের স্বাদ পেল আর্জেন্টিনা
-
আন্তর্জাতিক2 years ago
দ্য চেঞ্জ মেকার : এরদোয়ান
-
জাতীয়2 years ago
‘পরীক্ষা এক বছর না দিলে শিক্ষার্থীদের জীবনে এমন কোনো বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে না’