ইতিহাস
এক বিস্ময়ের নাম: হামিদুজ্জামান

হামিদুজ্জামান ১৯৪৪ সালের ১১ই জানুয়ারি রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার পশ্চিম বামনাইল ঝিকরাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
হামিদুজ্জামান পবিত্র কোরআন শরিফ নিজ হাতে বাঁশের কলম দিয়ে লিখেছিলেন। এর ওজন ৬১ কেজি। পৃষ্ঠাসংখ্যা ১ হাজার ১০০। কোরআন শরিফখানা বর্তমানে ঢাকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত রয়েছে।
হামিদুজ্জামান তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ ও বিন্যাসকরণ বিভাগের এলডিসি (লোয়ার ডিভিশনাল ক্লার্ক) হিসেবে করাচিতে কর্মরত ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাংলাদেশ সরকারের চাকরি পান। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে দুই বছর চাকরি করেছেন।
চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ১৯৮২ সালে তিনি এই কোরআন শরিফ লেখা শুরু করেন। আট বছরে তিনি ১ হাজার ১০০ পৃষ্ঠার কোরআন শরিফ লিখে শেষ করেন। আর্ট পেপারে বাঁশের কড়ি কলম দিয়ে তিনি কোরআন শরিফটি লিখেছেন।
হামিদুজ্জামান এই কোরআন শরিফের বর্ণনা দিয়ে মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তার একটি করে ফটোকপিও রেখে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে যেসব চিঠি পাঠিয়েছেন, সব কটির অনুলিপি রেখে দেওয়া হয়েছে।
তাঁর ছোট ছেলে নওরিনুজ্জামান বললেন, বাবা লেখার জন্য ব্যবহার করতেন গুডলাক ও ক্যামেল ব্র্যান্ডের কালি। দোয়াতে কলম ডুবিয়ে লিখতেন। একবারে ১০ পৃষ্ঠা করে লিখতেন। যখন লিখতে বসতেন, তখন ঘরে কাউকে ঢুকতে দিতেন না। সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত লিখতেন। ১৯৯০ সালে ঢাকার গোপীবাগ লেনের একটি দোকানে ৩২ হাজার টাকা দিয়ে হাতে লেখা কোরআন শরিফ বাঁধাই করেন। এটি বাঁধাই করতে দুটি গরুর চামড়া ব্যবহার করা হয়েছে। বাঁধাই শেষে কোরআন শরিফের দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ২৯ ইঞ্চি, প্রস্থ ২৩ ইঞ্চি ও উচ্চতা ৯ ইঞ্চি। তিনি বলেন, এই কোরআন শরিফ বাঁধাই করতে গিয়ে তাঁরা অনেক কষ্ট করেছেন। বাবার সঙ্গে রাতের পর রাত ওই বাঁধাইয়ের দোকানেই ঘুমিয়েছেন।
১৯৯২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে তিনি পবিত্র এই গ্রন্থখানি দেখাতে নিয়ে যান। সেই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি আবেদনপত্রও দিয়েছিলেন। তিনি তাঁকে তিন অথবা চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করে কোরআন শরিফখানার নির্ভুলতা নির্ণয় করা, ঢাকায় এর প্রদর্শনীর আয়োজন করা, যেখানে সব মুসলিম দেশের কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানান, মুসলিম দেশগুলোর প্রধান শহরে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা এবং প্রদর্শনী শেষে সরকারের পক্ষ থেকে কোরআন শরিফখানা সৌদি আরব অথবা ব্রুনেইয়ের বাদশাহকে উপঢৌকন হিসেবে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছিলেন।
হামিদুজ্জামানের ইচ্ছাগুলোর একটি শুধু পূরণ হয়েছে। গ্রন্থখানার নির্ভুলতা নির্ণয় করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দেওয়া হয়। তাদের একটি কমিটি ২০০৭ সালে কিছু সংশোধনের জন্য হামিদুজ্জামানকে ডাকে। মাত্র তিন দিনেই হামিদুজ্জামান তা সংশোধন করে দেন। তারপর আর এই পবিত্র গ্রন্থখানা হামিদুজ্জামানের ইচ্ছা অনুযায়ী কাউকে উপঢৌকন হিসেবে পাঠানো হয়নি। বাইরে প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করা হয়নি। তাঁকে ফেরতও দেওয়া হয়নি।
হামিদুজ্জামান স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রদর্শনী বা উপঢৌকন পাঠানো হলে সেখান থেকে অর্থ আসবে। তা দিয়ে তিনি কোরআন, হাদিস ও বিজ্ঞানের সমন্বয়ে একটি ইনস্টিটিউশন গড়ে তুলবেন। তাঁর এ স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে তাঁর হাতের লেখা কোরআন শরিফখানা ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। প্রত্যুত্তরে ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তৎকালীন মহাপরিচালকের পক্ষে গ্রন্থাগারিক মুহাম্মাদ শামসুল হক লিখেছেন,
‘এখন এটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্পত্তি।’ হামিদুজ্জামানের স্ত্রী রাশিয়া বেগম বলেন, ঢাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনে তিনি কোরআন শরিফখানা দেখতে গিয়ে মর্মাহত হয়েছেন। তাঁর দাবি, পবিত্র এই গ্রন্থখানা অনেকটা অযত্নে রাখা হয়েছে। যদিও পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে, তবু অনেক পৃষ্ঠাই জোড়া লেগে গেছে। পাতাগুলোর উজ্জ্বলতা কমে এসেছে। এভাবে রাখলে পাতাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন। কোরআন শরিফটি যেন সুষ্ঠু ভাবে সংরক্ষিত থাকে সে ব্যবস্হা করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানান।
ইতিহাস
কে ছিলেন আম্রপালী?

বর্তমানে আম্রপালী আম আমাদের সবার প্রিয়। কিন্তু ইতিহাসেও একজন আম্রপালি ছিলেন। চলুন আজ ইতিহাসের আম্রপালী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক :
আম্রপালী ছিলেন এমন একজন অনিন্দ্য সুন্দরী ; প্রায় ২,৫০০ বছর আগে রাষ্ট্র যাকে বানিয়েছিল নগরবধূ বা পতিতা-
স্বাদের দিক থেকে অনেকের কাছেই ‘আম্রপালী’ আম খুবই প্রিয় । আকারে ছোট কিন্তু মিষ্টির দিক থেকে যেন সকল আমকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ‘আম্রপালী’ । কিন্তু এই আমটার নামকরণ কোথা থেকে হল জানেন ?
আম্রপালী জন্মেছিলেন আজ থেকে ২,৫০০ বছর আগে ভারতে । তিনি ছিলেন সে সময়ের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী এবং নর্তকী । তার রুপে পাগল ছিল পুরো পৃথিবী আর এই রুপই তার জন্য কাল হয়ে ওঠে । যার কারণে তিনি ছিলেন ইতিহাসের এমন একজন নারী, যাকে রাষ্ট্রীয় আদেশে পতিতা বানানো হয়েছিল !
আম্রপালী বাস করতেন বৈশালী শহরে । বৈশালী ছিল প্রাচীন ভারতের গণতান্ত্রিক একটি শহর, যেটি বর্তমানে ভারতের বিহার রাজ্যের অর্ন্তগত ।
মাহানামন নামে এক ব্যক্তি শিশুকালে আম্রপালীকে আম গাছের নিচে খুঁজে পান । তার আসল বাবা-মা কে ইতিহাস ঘেঁটেও তা জানা যায়নি । যেহেতু তাকে আম গাছের নিচে পাওয়া যায় তাই তার নাম রাখা হয় আম্রপালী । সংস্কৃতে আম্র মানে আম এবং পল্লব হল পাতা । অর্থাৎ, আমগাছের নবীন পাতা ।
কিন্তু শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা দিতেই আম্রপালীকে নিয়ে হইচই পড়ে যায় । তার রুপে চারপাশের সব মানুষ পাগল হয়ে যান । দেশ-বিদেশের রাজপুত্রসহ রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে যান । সবাই তাকে একনজর দেখতে চান, বিয়ে করতে চান । এ নিয়ে আম্রপালীর মা-বাবা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন । তারা তখন বৈশালীতে সকল গণমান্য ব্যক্তিকে এর একটি সমাধান করার জন্য বলেন । কারণ, সবাই আম্রপালীকে বিয়ে করতে চান । তখন বৈশালীর সকল ক্ষমতাবান ও ধনবান ব্যক্তি মিলে বৈঠকে বসে নানা আলোচনার পর যে সিদ্ধান্ত নেন তা হল, আম্রপালীকে কেউ বিয়ে করতে পারবেন না । কারণ তার রুপ । সে একা কারো হতে পারে না । আম্রপালী হবে সবার । সে হবে একজন নগরবধু, মানে সোজা বাংলায় পতিতা ।
এটা ছিল একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত । ইতিহাসে এভাবে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে কাউকে পতিতা বানানো হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত খুবই বিরল ! আম্রপালী সে সভায় পাঁচটি শর্ত রাখেন-
(১) নগরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় তার ঘর হবে ।
(২) তার মুল্য হবে প্রতি রাত্রির জন্য পাঁচশত স্বর্ণমুদ্রা ।
(৩) একবারে মাত্র একজন তার গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন ।
(৪ ) শক্র বা কোন অপরাধীর সন্ধানে প্রয়োজনে সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার তার গৃহে প্রবেশ করা যাবে ।
(৫) তার গৃহে কে এলেন আর কে গেলেন- এ নিয়ে কোন অনুসন্ধান করা যাবে না ।
সবাই তার এসব শর্ত মেনে নেন।
প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যের রাজা ছিলেন বিম্বিসার । শোনা যায়, তার স্ত্রীর সংখ্যা নাকি ৫০০ ছিল ! নর্তকীদের নাচের এক অনুষ্ঠানে তিনি এক নর্তকীর নাচ দেখে বলেছিলেন, এ নর্তকী বিশ্বসেরা ।
তখন তার একজন সভাসদ বলেন- মহারাজ, এই নর্তকী আম্রপালীর নখের যোগ্য নয় !
বিম্বিসারের এই কথাটি নজর এড়ায়নি । তিনি তার সেই সভাসদের থেকে আম্রপালী সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে তাকে কাছে পাবার বাসনা করেন ।
কিন্তু তার সভাসদ বলেন, সেটা সম্ভব নয় । কারণ, তাহলে আমাদের যুদ্ধ করে বৈশালী রাজ্য জয় করতে হবে আর আম্রপালীর দেখা পাওয়াও এত সহজ নয় । দেশ-বিদেশের বহু রাজাসহ রাজপুত্ররা আম্রপালীর প্রাসাদের সামনে তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন । কিন্তু মন না চাইলে তিনি কাউকে দেখা দেন না ।
এত কথা শুনে বিম্বিসারের আগ্রহ আরও বেড়ে গেল । তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, ছদ্মবেশে বৈশালী রাজ্যে গিয়ে আম্রপালীকে দেখে আসবেন । কি এমন আছে সেই নারীর মাঝে, যার জন্য পুরো পৃথিবী পাগল হয়ে আছে !
তারপর বহু চড়াই উৎরাই শেষে তার আম্রপালীর সাথে দেখা করার সুযোগ আসে। কিন্তু দেখা করতে গিয়ে রাজা চমকে উঠেন, এত কোন নারী নয় ; যেন সাক্ষাৎ পরী !
কিন্তু অবাক রাজার জন্য আরও অবাক কিছু অপেক্ষা করছিল । কারণ, আম্রপালী প্রথম দেখাতেই তাকে মগধ রাজ্যের রাজা বলে চিনে ফেলেন এবং জানান- তিনি তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন বহু আগে থেকেই ।
এই কথা শুনে রাজা সাথে সাথে তাকে তার রাজ্যের রাজরাণী বানানোর প্রস্তাব দেন । কিন্তু আম্রপালী জানান, তার রাজ্যের মানুষ এটা কখনোই মেনে নেবেন না । উল্টো বহু মানুষের জীবন যাবে । রক্তপাত হবে । তাই রাজাকে দ্রুত এখান থেকে চলে যেতে বলেন ।
কিন্তু বিম্বিসার বৈশালী আক্রমন করে আম্রপালীকে পেতে চান । ওদিকে আম্রপালী তার নিজের রাজ্যের কোন ক্ষতি চান না । তাই তিনি রাজাকে তার নিজ রাজ্যে ফেরত পাঠান এবং বৈশালীতে কোন আক্রমণ হলে তিনি তা মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন ।
এদিকে বিম্বিসারের সন্তান অজাতশত্রুও আম্রপালীর প্রেমে মগ্ন ছিলেন । তিনি বিম্বিসারকে আটক করে নিজে সিংহাসন দখল করে বসেন এবং আম্রপালীকে পাওয়ার জন্য বৈশালী রাজ্য আক্রমণ করে বসেন । কিন্তু দখল করতে সক্ষম হননি এবং খুব বাজেভাবে আহত হন । সেদিনও আম্রপালী অজাতশত্রুর বিয়ের প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন ।
এত নাটকীয়তার পর শেষের দিকে এসে কি হল ? গৌতম বুদ্ধর সময়কাল তখন । গৌতম বুদ্ধ তার কয়েকশ সঙ্গী নিয়ে বৈশালী রাজ্যে এলেন । একদিন বৈশালী রাজ্যের রাবান্দা থেকে এক বৌদ্ধ তরুণ সন্ন্যাসীকে দেখে আম্রপালীর মনে ধরে গেল । তিনি সেই সন্ন্যাসীকে চার মাস তার কাছে রাখার জন্য গৌতম বুদ্ধকে অনুরোধ করলেন । সবাই ভাবলেন, বুদ্ধ কখনই রাজি হবেন না । কারণ, একজন সন্ন্যাসী এমন একজন পতিতার কাছে থাকবেন ; এটা হতেই পারে না । কিন্তু গৌতম বুদ্ধ তাকে রাখতে রাজি হলেন এবং এটাও বললেন, আমি শ্রমণের (তরুণ সে সন্ন্যাসীর নাম ছিল) চোখে কোন কামনা-বাসনা দেখছি না । সে চার মাস থাকলেও নিষ্পাপ হয়েই ফিরে আসবে- এটা আমি নিশ্চিত !
চার মাস শেষ হল । গৌতম বুদ্ধ তার সঙ্গীদের নিয়ে চলে যাবেন । তরুণ শ্রমণের কোন খবর নেই । তবে কি আম্রপালীর রুপের কাছেই হেরে গেলেন শ্রমণ ? সেদিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে তরুণ শ্রমণ ফিরে আসেন । তার পিছনে পিছনে আসেন একজন নারী । সেই নারীই ছিলেন আম্রপালী । আম্রপালী তখন বুদ্ধকে বলেন, তরুণ শ্রমণকে প্রলুব্ধ করতে কোনও চেষ্টা বাকি রাখেননি তিনি । কিন্তু এই প্রথম কোন পুরুষকে বশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বৈশালীর নগরবধূ আম্রপালী । তাই আজ সর্বস্ব ত্যাগ করে বুদ্ধের চরণে আশ্রয় চান তিনি ।
পরে সব কিছু দান করে বাকী জীবন গৌতম বুদ্ধের চরণেই কাটিয়ে দেন ইতিহাস বিখ্যাত সেই রমণী আম্রপালী আর এই আম্রপালী নামেই ১৯৭৮ সালে ভারতের আম গবেষকরা ‘দশোহরি’ ও ‘নিলাম’- এই দু’টি আমের মধ্যে সংকরায়ণের মাধ্যমে এক নতুন জাতের আম উদ্ভাবন করেন এবং নাম রাখেন ‘আম্রপালী’।
আন্তর্জাতিক
ফিলিস্তিন ইসরায়েল সংঘাতের শুরু কিভাবে?

ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে লড়াই এখন যেরকম তীব্র হয়ে উঠেছে তা একটি “পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে” রূপ নিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ।
সর্বশেষ এই সহিংসতা শুরু হয়েছে জেরুজালেমে এক মাস ধরে চলতে থাকা তীব্র উত্তেজনার পর। কিন্তু ইসরায়েলি আর ফিলিস্তিনিদের এই দীর্ঘ সংঘাতের পেছনের ইতিহাস আসলে কী?চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা যাক:
চলুন ফিরে যায় একশ বছর পূর্বে
মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন নামের যে এলাকা, সেটি ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের পর ব্রিটেন ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
তখন ফিলিস্তিনে যারা থাকতো তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল আরব, সেই সঙ্গে কিছু ইহুদী, যারা ছিল সংখ্যালঘু।
কিন্তু এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে শুরু করলো যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্রিটেনকে দায়িত্ব দিল ইহুদী জনগোষ্ঠীর জন্য ফিলিস্তিনে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার।
ইহুদীরা এই অঞ্চলকে তাদের পূর্বপুরুষদের দেশ বলে দাবি করে। কিন্তু আরবরাও দাবি করে এই ভূমি তাদের এবং ইহুদীদের জন্য সেখানে রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টার তারা বিরোধিতা করে।
উনিশশো বিশ থেকে ১৯৪০ দশকের মধ্যে ইউরোপ থেকে দলে দলে ইহুদীরা ফিলিস্তিনে যেতে শুরু করে এবং তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ইউরোপে ইহুদী নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভয়ংকর ইহুদী নিধনযজ্ঞের পর সেখান থেকে পালিয়ে এরা নতুন এক মাতৃভূমি তৈরির স্বপ্ন দেখছিল।
ফিলিস্তিনে তখন ইহুদী আর আরবদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হলো, একই সঙ্গে সহিংসতা বাড়ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধেও।
উনিশশো সাতচল্লিশ সালে জাতিসংঘে এক ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনকে দুই টুকরো করে দুটি পৃথক ইহুদী এবং আরব রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হলো। জেরুজালেম থাকবে একটি আন্তর্জাতিক নগরী হিসেবে। ইহুদী নেতারা এই প্রস্তাব মেনে নেন, কিন্তু আরব নেতারা প্রত্যাখ্যান করেন। জাতিসংঘের এই পরিকল্পনা কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি।
ব্রিটিশরা এই সমস্যার কোন সমাধান করতে ব্যর্থ হয়ে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ছাড়ে। ইহুদী নেতারা এরপর ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়।
বহু ফিলিস্তিনি এর প্রতিবাদ জানান এবং এরপর যুদ্ধ শুরু হয়। প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর সৈন্যরাও যেখানে যায় যুদ্ধ করতে।
হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তখন হয় তাদের ঘরবাড়ি ফেলে পালাতে হয় অথবা চলে যেতে বাধ্য করা হয়। ফিলিস্তিনিরা এই ঘটনাকে ‘আল নাকবা’ বা ‘মহা-বিপর্যয়’ বলে থাকে।
পরের বছর এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে যখন যুদ্ধ শেষ হলো , ততদিনে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে। জর্ডান দখল করেছিল একটি অঞ্চল, যেটি এখন পশ্চিম তীর বলে পরিচিত। আর মিশর দখল করেছিল গাযা।
জেরুজালেম নগরী ভাগ হয়ে যায়, ইসরায়েলি বাহিনী দখল করে নগরীর পশ্চিম অংশ, আর জর্ডানের বাহিনী পূর্ব অংশ।
দু’পক্ষের মধ্যে যেহেতু কখনোই কোন শান্তি চুক্তি হয়নি, তাই উভয় পক্ষই অপর পক্ষকে দোষারোপ করতে থাকে। দুই পক্ষের মধ্যে পরের দশকগুলোতে এরপর আরও বহু যুদ্ধ হয়েছে।
উনিশশো সাতষট্টি সালে আরেকটি যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীর, সিরিয়ার গোলান মালভূমি, গাযা, এবং মিশরের সিনাই অঞ্চল দখল করে নেয়।
বেশিরভাগ ফিলিস্তিনি শরণার্থী থাকে গাযা এবং পশ্চিম তীরে। প্রতিবেশী জর্ডান, সিরিয়া এবং লেবাননেও আছে অনেক ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েল এই ফিলিস্তিনি এবং তাদের বংশধরদের কাউকেই আর তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দেয়নি। ইসরায়েল বলে থাকে, এদের ফিরতে দিলে সেই চাপ ইসরায়েল নিতে পারবে না এবং ইহুদী রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।
ইসরায়েল এখনো পশ্চিম তীর দখল করে আছে। গাযা থেকে তারা যদিও সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছে, জাতিসংঘের দৃষ্টিতে এটি এখনো ইসরায়েলের দখলে থাকা একটি এলাকা।
ইসরায়েল এখন পুরো জেরুজালেম নগরীকেই তাদের রাজধানী বলে দাবি করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায়। পুরো জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কেবল যুক্তরাষ্ট্রসহ হাতে গোনা কয়েকটি দেশ।
গত ৫০ বছর ধরে ইসরায়েল এসব দখলীকৃত জায়গায় ইহুদী বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে। ছয় লাখের বেশি ইহুদী এখন এসব এলাকায় থাকে।
ফিলিস্তিনিরা বলছে, আন্তর্জাতিক আইনে এগুলো অবৈধ বসতি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। তবে ইসরায়েল তা মনে করে না।
পূর্ব জেরুজালেম, গাযা এবং পশ্চিম তীরে যে ফিলিস্তিনিরা থাকেন, তাদের সঙ্গে ইসরায়েলিদের উত্তেজনা প্রায়শই চরমে উঠে।
গাযা শাসন করে কট্টরপন্থী ফিলিস্তিনি দল হামাস। ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের অনেকবার যুদ্ধ হয়েছে। গাযার সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল এবং মিশর, যাতে হামাসের কাছে কোন অস্ত্র পৌঁছাতে না পারে।
গাযা এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা বলছে, ইসরায়েলের নানা পদক্ষেপ এবং কঠোর বিধিনিষেধের কারণে তারা খুবই দুর্দশার মধ্যে আছে। অন্যদিকে ইসরায়েল দাবি করে যে, ফিলিস্তিনিদের সহিংসতা থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য তাদের এই কাজ করতে হয়।
এবছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি রমজানের শুরু থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। তখন প্রায় প্রতি রাতেই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল।
পূর্ব জেরুজালেম হতে কিছু ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদের হুমকি ফিলিস্তিনিদের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে।
মূল সমস্যাগুলো কী?
ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনিরা বেশ কিছু ইস্যুতে মোটেই একমত হতে পারছে না।
এর মধ্যে আছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ব্যাপারে কী হবে; পশ্চিম তীরে যেসব ইহুদী বসতি স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো থাকবে, নাকি সরিয়ে নেয়া হবে; জেরুজালেম নগরী কি উভয়ের মধ্যে ভাগাভাগি হবে; আর সবচেয়ে জটিল ইস্যু হচ্ছে- ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্ন।
গত ২৫ বছর ধরেই শান্তি আলোচনা চলছে থেমে থেমে। কিন্তু সংঘাতের কোন সমাধান এখনো মেলেনি।
এক কথায় বলতে গেলে, খুব সহসা এই পরিস্থিতির কোন সমাধান মিলবে না।
সংকট সমাধানের সর্ব-সাম্প্রতিক উদ্যোগটি নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এটিকে ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এই উদ্যোগকে নাকচ করে দিয়েছিল একেবারেই একতরফা একটি উদ্যোগ বলে। যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগ নিয়ে আসলে কাজ মোটেই এগোয়নি।
ভবিষ্যতের যে কোন শান্তি চুক্তির আগে দুপক্ষকে জটিল সব সমস্যার সমাধানে একমত হতে হবে।
সেটি যতদিন না হচ্ছে, দুপক্ষের এই সংঘাত চলতেই থাকবে।
আন্তর্জাতিক
জার্মানিতে নাৎসিবাদ ও হিটলারের উত্থান

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের প্রেক্ষাপট দেশটির ইতিহাসের এক অরুণ অধ্যায়। যুদ্ধের বিজয়ী পক্ষের চাপিয়ে দেয়া অন্যায় ও অন্যায্য চুক্তিসমূহ দেশটির অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে। ভার্সাই চুক্তির ফলে আবির্ভূত হওয়া ভাইমার প্রজাতন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষার মুখে পড়ে। পুরো জার্মান সমাজ এক অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পতিত হয়। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সংকট, খাদ্য ঘাটতি, বেকার সমস্যা, বাণিজ্য মন্দা, জনসংখ্যা সমস্যা, দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিসহ নানান সমস্যা জার্মান জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। জনগণের মনে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার কালো মেঘ ঘনীভূত হতে থাকে যা তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা প্রতিশোধের আগুনকে জাগিয়ে তোলে। ফলশ্রুতিতে ইতালির ফ্যাসিস্টদের আদলে জার্মানিতে নাৎসি নামে এক উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটে।
National sozialismus অর্থাৎ জার্মানির জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল যা পৃথিবীব্যাপী নাৎসিবাদী(Nazism) বা নাৎসি পার্টি নামে সমধিক পরিচিত। এটি একটি উগ্ৰ ডানপন্থী জার্মান জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী রাজনৈতিক মতাদর্শ যা ইতালির ফ্যাসিবাদের সমপর্যায়ের রাজনৈতিক দর্শনের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। নাৎসিবাদের মধ্যে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কৌলিবাদ ( Scientific Racism), ইহুদি বিদ্বেষী মনোভাব ( Anti Semitism), ও সাম্যবাদ ( Communism) বিরোধী অগণতান্ত্রিক চেতনা। আনুষ্ঠানিকভাবে বলতে গেলে নাৎসিবাদ হলো জার্মান চ্যান্সেলর এডলফ হিটলারের রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা ও আদর্শের সাথে সম্পর্কিত বিষয়াদি যার মূলমন্ত্র জার্মানির জাতীয় সমাজতান্ত্রিক পার্টির প্রতিষ্ঠার সাথে নিহত রয়েছে।
বিসমার্কের শাসনামলে জার্মানি পুরো পৃথিবী জুড়ে যে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তার পরিসমাপ্তি ঘটে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। জার্মান রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে যে ভাইমার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা অচিরেই প্রশ্নবিদ্ধ হয় পর্যাপ্ত রাজনৈতিক সমর্থনের অভাবে। প্রজাতন্ত্রের দুর্বলতার সুযোগে জার্মানিতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে শুরু করে, প্রজাতন্ত্র বিরোধীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর আঁতাত পাকাপোক্ত হতে থাকে, অর্থনৈতিক মন্দাসহ অন্যান্য কারণে তৎকালীন ভাইমার প্রজাতন্ত্রের নেতা ফ্রেডরিক এর্বাটের প্রশাসন দুর্বল হয়ে পড়ে, সরকারের পক্ষে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। পক্ষান্তরে বিদ্যমান সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে, জনগণের অনুভূতিকে কাজে লাগাতে এডলফ হিটলার তৎপর হয়ে ওঠেন। তিনি জার্মানিকে তার হারিয়ে যাওয়া গৌরব পুনরুদ্ধার করে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও শ্রেষ্ঠতম জাতি হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন যা তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তিনি খুবই অল্প সময়ের ব্যবধানে জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা ও জাতীর স্বপ্নদ্রষ্টার আসনে অধিষ্ঠিত হতে সক্ষম হন। হিটলার ও নাৎসি দল একে অপরের পরিপূরক হিসেবে জার্মানির সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
হিটলারের নেতৃত্বে সুপ্রতিষ্ঠিত নাৎসি পার্টি সেসকল নীতিমালার অনুসরণ করত তা কিন্তু নব উদ্ভাবিত কোন মতবাদ ছিল না। উদারতাবাদ, যুক্তিবাদ এবং মার্ক্সবাদ বিরোধী মতাদর্শের বিপরীতে জার্মান আর্য রক্ত, জার্মান ভাষা ও সকল ধর্মীয় বিশ্বাসমুক্ত উগ্ৰ জাতীয়তাবাদী চেতনাই ছিল নাৎসি পার্টির ভৌতভিত্তি। নাৎসি পার্টির মূল প্রতিপাদ্য ছিল- আর্য রক্তের ধারক জার্মানরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি এবং পৃথিবীর নেতৃত্ব লাভের অধিকার একমাত্র তাদেরই আছে।
২৯২০ এডলফ হিটলার নাৎসি পার্টির জন্য পঁচিশ দফা সম্বলিত এক ইশতেহার জারি করেন যা তৎকালীন জার্মানির জনমনে ব্যাপক আশার সঞ্চার করে। আশাহত জার্মান সমাজের কাছে হিটলার একমাত্র ত্রাতা হিসেবে অভিহিত হন। জার্মানির যুবসমাজ হিটলারের নাৎসি পার্টির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং দিনে দিনে হিটলারের প্রভাব চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। তিনি ১৯৩৩ সালে জার্মানির চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার নাম পৃথিবীর ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে পরিনত হয়।
লেখক- আকতারুল ইসলাম
-
বিনোদন2 years ago
৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড হবে মাত্র এক সেকেন্ডেই!
-
ইতিহাস3 years ago
রহস্যময়ী ক্লিওপেট্রা
-
আন্তর্জাতিক2 years ago
বিশ্বজুড়ে বিয়ের যত আজব অদ্ভুত রীতিনীতি
-
জাতীয়2 years ago
পাখির গ্রাম ঝিকরাপাড়া (রওনাক ফেরদৌস)
-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি3 years ago
মোবাইল ফোন আসল না নকল বুঝবেন যেভাবে
-
খেলাধুলা2 years ago
প্রথম জয়ের স্বাদ পেল আর্জেন্টিনা
-
আন্তর্জাতিক2 years ago
দ্য চেঞ্জ মেকার : এরদোয়ান
-
জাতীয়2 years ago
‘পরীক্ষা এক বছর না দিলে শিক্ষার্থীদের জীবনে এমন কোনো বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে না’