Connect with us

বিনোদন

পৃথিবীর একমাত্র বায়োনিক চাইল্ড অলিভিয়া

মেয়েটির শরীরে নেই ব্যথা, ঘুম ও খিদে 😮

Published

on

bionic child olivia
Photo Credit:

তখন  মেয়েটির বয়স সবে সাত বছর। মায়ের সঙ্গে সে হাঁটতে বের হয়। তবে কিছুতেই  মায়ের হাত ধরবে না। নিজের খেয়াল মতো রাস্তা পার হতে গিয়ে ভয়ঙ্কর এক  দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সে। ছোট্ট শরীরটাকে ধাক্কা মারার পর ঠেলতে ঠেলতে ১০০  ফুট দূরে নিয়ে গিয়েছিলো একটি গাড়ি। ২০১৬ সালে ঘটানাটি ঘটে। পথচলতি লোকেরা  চিৎকার করে ওঠে। মাথা চাপড়াতে চাপড়াতে ছুটে যায় মেয়েটির মা। তিনি ও বাকি  সবাই নিশ্চিত ছিলেন যে, মেয়েটি আর বেঁচে নেই। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে মেয়েটি  উঠে দাঁড়িয়ে মায়ের কাছে ফিরে আসে। তার মুখে একটুও ভয় বা আতঙ্ক নেই। মেয়ের  হাসিমুখের অভিব্যক্তি দেখে তার মায়ের মনে হচ্ছিল সে বলতে চাইছিলো,‘কী হয়েছে  এত চিন্তার কী আছে?’

ডাক্তারের  কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তার শরীরে কয়েকটি আঁচড়ের দাগ ছাড়া আর কিছু আঘাতের  চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুরো শরীর স্ক্যান করেও ভেতরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া  যায়নি। ডাক্তাররা নিশ্চিত হলেন কোনো অবস্থাতেই মেয়েটি যন্ত্রণা অনুভব করে  না। শুধু ব্যথা নয় খিদে এমনকি ঘুমও আসে না তার। অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, সত্যিই  এমন এক মেয়ে আছে এই বিশ্বে। তার নাম অলিভিয়

২০০৯  সালে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের কাছে হাডারফিল্ড নামের শহরের ফার্নসওয়ার্থ  নামক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গৃহকর্তা রিড, তার স্ত্রী নিকি ও তাদের  পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে গড়া সাধারণ মধ্যবিত্ত এক ব্রিটিশ পরিবার। পৃথিবীর  অধিকাংশ চিকিৎসক আজ এই পরিবারটিকে চেনেন। এর কারণ হলো তাদের দ্বিতীয় মেয়ে  অলিভিয়া।

১০  বছর বয়সী অলিভিয়া পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। অলিভিয়ার এমন তিনটি বৈশিষ্ট্য আছে যা  পৃথিবীতে আর কারও নেই। যা ওই অতি ক্ষুদ্র মেয়েটিকে করে তুলেছে অলৌকিক  ক্ষমতাসম্পন্ন। ছোট্ট অলিভিয়া দিনের পর দিন না খেয়ে, না ঘুমিয়ে থাকতে পারে  এবং যত বড় আঘাতই পাক না কেন অলিভিয়ার যন্ত্রণা লাগে না। ১০ বছরের জীবনে  একদিনও কাঁদেনি অলিভিয়া।

ফার্নসওয়ার্থ  পরিবারে দ্বিতীয় কন্যা ফুটফুটে অলিভিয়া। কয়েক মাসের মধ্যে বাবা-মা তাদের  মেয়ের অলিভিয়ার কাণ্ড দেখে আতঙ্কিত হলেন। ছুটলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারকে  বলেন, তাদের মেয়ে অলিভিয়া খিদে পেলে কাঁদে না, দিনে রাতে একদম ঘুমায় না,  কোনো ধরনের আঘাত পেলেও কাঁদে না। ডাক্তার হেসে দম্পতিকে আশ্বাস দিয়েছিলেন,  এটা স্বাভাবিক। আপনারা বেশি খাইয়ে দিচ্ছেন তাই ক্ষুধায় কাঁদছে না। আর ঘুমটা  নিয়ে সব বাবা-মা’র চিন্তা, ওটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। কিছুদিন পরেই ঠিক  হয়ে যাবে।

ধীরে  ধীরে বড় হয়েছে অলিভিয়া, মা-বাবা খিদের জ্বালায় মেয়ে কাঁদে না দেখে বাবা-মা  তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করতেন। অনেক চেষ্টার পরও অলিভিয়া যদিও  সামান্য কিছু খেতো, কিন্তু কখনো ঘুমোতে চাইতো না। সারাক্ষণ তাকে নিয়ে খেলতে  হতো। পরিবারের সবাই যখন ঘুমে মগ্ন থাকে অলিভিয়া তখন ছোট্ট পায় টলতে টলতে  সারা বাড়ি জুড়ে সারা রাত ধরে ঘোরাঘুরি করতো। বাধ্য হয়ে বাবা-মা রাতে শিশু  অলিভিয়াকে একটি খালি ঘরে খেলনা দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতেন। তাদেরও তো ঘুমোতে  হবে, না ঘুমিয়ে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন।

ডাক্তার  বললেন, এক জটিল গঠনগত ত্রুটির শিকার হয়েছে অলিভিয়া। তবে এক বছরের মধ্যেও  অলিভিয়ার এই সব অভ্যাসের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই অন্য এক ডাক্তারের কাছে  যান তার বাবা-মা। সব শুনে সেই ডাক্তার অলিভিয়াকে পাঠিয়েছিলেন একটি  ল্যাবরেটরিতে। সেখানে অলিভিয়ার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট নিয়ে  ডাক্তারের কাছে যান তার বাবা-মা। রিপোর্টটি দেখে ডাক্তারের মুখ বিমর্ষ হয়ে  যায়। সে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ফোন করেন। এরপর ডাক্তার রিপোর্টটি পাঠিয়েছিলেন  পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে।

কয়েকদিন  পর অলিভিয়ার বাবা-মাকে ডাক্তার বলেন, আসলে অলিভিয়া ক্রোমোজোম সিক্স পি  ডিলেশন নামক একটি জটিল গঠনগত ত্রুটির শিকার। তাই অলিভিয়ার ক্ষুধা ও ঘুম পায়  না। অলিভিয়ার বাবা-মাকে ডাক্তার বলেছিলেন, এ রোগের কোনো ওষুধ নেই।  অলিভিয়াকে বাঁচাতে গেলে তাকে সময়ে সময়ে খাইয়ে দিতে হবে, কিন্তু ঘুমের জন্য  কিছু করতে পারবো না। কারণ এইটুকু মেয়েকে ঘুমের ওষুধ দেয়া যাবে না। যেহেতু  না ঘুমিয়েও সে সুস্থ আছে তাহলে সেভাবেই তাকে থাকতে দিন। কী এই ক্রোমোজোম  সিক্স পি ডিলেশন? মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় ভ্রুণের কোষগুলো বারবার বিভাজিত  হয়ে নতুন কোষ তৈরি করতে থাকে, ফলে গর্ভস্থ সন্তানের দেহে কোষের সংখ্যা  দ্রুত ও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অলিভিয়া যখন মায়ের পেটে বেড়ে উঠছিলো, তার  কোষের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছিলো।

তবে  বিভাজনের ত্রুটির জন্য অলিভিয়ার দেহের কোষগুলোতে সিক্স পি নামক ক্রোমোজোম  উপাদানটি ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই ভূমিষ্ঠ হয় অলিভিয়া। তবে কোষের ত্রুটি  স্থায়ীভাবেই থেকে গিয়েছিলো অলিভিয়ার দেহে। অলিভিয়ার দেহ থেকে সিক্স পি নামক  ক্রোমোজোম মুছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অলিভিয়ার খিদে, ঘুম এবং ব্যথা পাওয়ার  অনুভুতিও তার জীবন থেকে মুছে যায়।

অপমান  করলে ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয় অলিভিয়া। ডাক্তারের কথা মতো, অলিভিয়ার বাবা-মা  মেয়েকে বড় করতে থাকেন। তারপর অলিভিয়া স্কুলে ভর্তি হয়। দিন-রাত জেগে থেকেও  স্কুলের মেধাবী ছাত্রী সে। পরীক্ষায় অলিভিয়ার নাম্বার সবচেয়ে বেশি থাকে।  খেলাধুলাতেও সে স্কুলে পিছিয়ে থাকে না। তবে শান্ত ও হাসিখুশি অলিভিয়ার  একটাই দোষ, কেউ তাকে অপমান করলে সে ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তখন অলিভিয়া  আক্রোশবশত কোনো জিনিস দিয়ে আঘাত করে সেই মানুষটিকে বা নিজের মাথা দেওয়ালে  ঠোঁকে।

সাইকোলজিস্ট,  সাইক্রিয়াটিস্ট কিছুই বাদ দেননি অলিভিয়ার বাবা-মা। কিন্তু তারা  বলেছিলেন,তাদের কিছু করার নেই। এসব হচ্ছে অলিভিয়ার ক্রোমোজোমের গঠনগত  সমস্যার উপসর্গ। ওষুধ দেয়া যাবে না কারণ অলিভিয়া ওইটুকু সময় বাদ ছাড়া বাকি  সময় সম্পূর্ণ সুস্থ ও হাসিখুশি থাকে। ধরা পড়েছিল অলিভিয়ার আরেক অস্বাভাবিক  বৈশিষ্ট্য রোজ বিকেলে বাড়ির সামনের পার্কে তার ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলা করতে  যেতো অলিভিয়া। একদিন অলিভিয়া একা গিয়েছিলো পার্কে।

সেখান  থেকে ফেরার পর অলিভিয়াকে দেখে আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠেছিলেন মা নিকি। অলিভিয়ার  নিচের ঠোঁটের অর্ধেকটা কেটে ঝুলছিল। জামা রক্তে ভেজা, কিন্তু অলিভিয়ার মুখে  হাসি। আতঙ্কিত মায়ের পাশ দিয়ে ঘরে ঢুকে জুতো খুলতে শুরু করেছিলো অলিভিয়া।  মুখে একটুও ব্যথার অভিব্যক্তি ছিল না তার।

হাসপাতালে  ভর্তি করতে হয়েছিল অলিভিয়াকে, প্রথমে স্টিচ ও পরে প্লাস্টিক সার্জারি করা  হয়। পুরো সময়টিতে একটু কাঁদেনি অলিভিয়া। হাসিমুখে ইনজেকশনের পর ইনজেকশন  নিয়েছিলো। ডাক্তাররা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ‘ইস্পাত’ কঠিন মানসিকতার মেয়েটিকে  দেখে। তারপরে অসংখ্য বার আঘাত পেয়েছে অলিভিয়া। কিন্তু তার মুখ থেকে একবার  ‘আহ” শব্দটিও বের হয়নি।

অলিভিয়া  পৃথিবীর একমাত্র ‘সুপার হিউম্যান’ এই দুর্ঘটনার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের  ডাক্তারদের সঙ্গে অলিভিয়ার ডাক্তারদের ফোন এবং ই-মেল চালাচালি এবং  পৃথিবীব্যাপী সার্ভে রিপোর্টের আদানপ্রদান শুরু হয়েছিলো। কিছুদিন পরে এই  বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা অলিভিয়াকে পৃথিবীর প্রথম ‘বায়োনিক চাইল্ড’ ঘোষণা  করেছিলেন। এর অর্থ হলো অলিভিয়া অস্বাভাবিক ক্ষমতাযুক্ত একটি শরীর ও মন নিয়ে  জন্মেছে, এই পৃথিবীতে অলিভিয়ার মতো সহ্যশক্তি আর কারো নেই।

অলিভিয়া  কয়েকমাস না ঘুমিয়ে, কয়েক সপ্তাহ না খেয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে, আর  তার শরীর যেকোনো আঘাত ও যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে ঠিক রোবটের মতো। এই তিনটি  বৈশিষ্ট্য সম্মিলিতভাবে বিশ্বে আর কোনো মানুষের দেহে কখনো দেখা যায়নি। সারা  পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খুঁজে আজ অবধি ১০০ জনকে পাওয়া গেছে যাদের সিক্স পি  নামক ক্রোমোজোম ব্যাধিগ্রস্ত আছে। কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে  অলিভিয়াই প্রথম মানুষ যার শরীরে কোন ব্যথা, ঘুম,ক্ষুধা নেই এই তিনটি  উপসর্গই আছে। ভাবলেই অবাক লাগে শারীরিক ত্রুটি আজ লৌহমানবী অলিভিয়াকে বিশ্ব  বিখ্যাত করে তুলেছে। করে তুলেছে বিশ্ব ইতিহাসের প্রথম সুপার হিউম্যান।

~সংগৃহীত

Continue Reading

বিনোদন

৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড হবে মাত্র এক সেকেন্ডেই!

প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার জুড়ে ৩১৯ টেরাবাইট প্রতি সেকেন্ডের ইন্টারনেট গতির নজির সৃষ্টি হয়েছে জাপানে

Published

on

By

Photo Credit:

শুনতে নিশ্চয়ই অবাক লাগছে যে,  ৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড করতে পারেন এক সেকেন্ডে একটা ক্লিক করলেন। ব্যাস, ছবি সেভের মতো মুভি সেভ হয়ে গেল। তাও আবার 8K-তে। তবে শুধু একটাই নয়। চাইলে আপনি ৫০ হাজার এমন সিনেমা ডাউনলোড করতে পারেন। এক সেকেন্ডেই!

এমনই অকল্পনীয় দ্রুত গতির ইন্টারনেটের জন্য বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি। প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার জুড়ে ৩১৯ টেরাবাইট প্রতি সেকেন্ডের ইন্টারনেট গতির নজির সৃষ্টি হয়েছে জাপানে।

এর আগে বিশ্বের সর্বাধিক দ্রুত ইন্টারনেট স্পিড ছিল ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের। সেখানে গবেষকরা ১৭৮ টিবিপিএস-এর রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন। এবার তার প্রায় দ্বিগুণ গতির ইন্টারনেট জাপানে।

প্রতি সেকেন্ডে ৩১৯ টেরাবাইট চলুন এতো দ্রুত গতি সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক :

একটি টেরাবাইট মানে ১,০০০ গিগাবাইট। এক গিগাবাইট মানে ১০২৪ মেগাবাইট। ২০২০ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বাধিক মোবাইল ব্রডব্যান্ডের স্পিডের রেকর্ড রয়েছে। সেটি প্রায় ১০০ এমবিপিএস (প্রতি সেকেন্ডে মেগাবাইট) ছিল। বিশ্বের সর্বোচ্চ ফিক্সড-লাইন ব্রডব্যান্ড গতির রেকর্ড রয়েছে সিঙ্গাপুরে।(২০১৫ এমবিপিএস) । থিয়োরেটিকালি ১৭৮ টিবিপিএস-এ, মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো নেটফ্লিক্স ডাউনলোড করা সম্ভব। এদিকে নতুন রেকর্ডে স্পিড ৩১৯ টিবিপিএস। অর্থাত্ পুরো নেটফ্লিক্স ২ বার ডাউনলোড করে ফেলা যাবে এক সেকেন্ডে।  নাসার সিস্টেম ৪০০ গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ডের গতিতে চলে।

 কিন্তু এত গতি দিয়ে কী হবে?

না, সিনেমা ডাউনলোডের জন্য এত গতি মোটেও নয়। আসলে দ্রুত ডেটা ব্যাক আপ, আপডেট ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই ধরণের দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্যাবলী, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মহাকাশ অভিযানের ডেটা স্ট্রিমিং ও আপডেট, প্রচুর তথ্যের ব্যাক আপ নেওয়া ইত্যাদি কাজে এ ধরণের দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রয়োজন।

Continue Reading

খেলাধুলা

কি কি থাকছে ফিফার নতুন নিয়মে?

Published

on

By

ফিফার নতুন নিয়ম

বদলে যাচ্ছে ফুটবলের নিয়ম। খেলাটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে ৯০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। থাকবে ইচ্ছেমতো ফুটবলার পরিবর্তনের সুযোগ। হলুদ কার্ড দেখলে সাসপেন্ড হবেন খেলোয়াড়রা, সাইডলাইনে বসে থাকতে হবে ৫ মিনিট। এমন বেশকিছু নতুন নিয়ম অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টুর্নামেন্ট ফিউচার অব ফুটবল কাপে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবর্তন করেছে ফিফা। এখনো কিছু চূড়ান্ত না হলেও এরই মধ্যে ভক্তদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুতেই এসেছে পরিবর্তন। খেলাধুলাও এর বাইরে নয়। দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না করছে খেলার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো।

টি-২০ ফরম্যাট বিশ্ব ক্রিকেটে যোগ করে নতুন মাত্রা। এবার ফুটবলও সে পথে হাঁটছে। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবলে নতুন কিছু সংযোজনের ক্ষমতা আছে শুধু তাদেরই। ফুটবলকে আরও আকর্ষণীয় করতে বেশকিছু নিয়মে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে তারা।

ইউরোপের চারটি ক্লাব পিএসভি, আজেড আল্কমার, লাইপজিগ ও ক্লাব ব্রুজের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের একটি টুর্নামেন্ট চলছে। ফিউচার অব ফুটবল কাপ নামে সেই টুর্নামেন্টে কিছু নিয়মে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তন এনেছে ফিফা। এমন খবর দিয়েছে ইউরোপের বেশকিছু সংবাদমাধ্যম। যদিও ফিফার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তবে খবর প্রচারের পর তা নিয়ে কোনো আপত্তিও জানায়নি ফিফা।

নতুন সেই নিয়মগুলো কি? সবার আগে খবরটি প্রচার করে খেলাধুলাবিষয়ক স্পেনের শীর্ষ পত্রিকা মুন্ডো দেপোর্তিভো। তারা বলছে, প্রস্তাবিত নিয়মে ৯০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। প্রতি অর্ধে খেলা হবে ৩০ মিনিট। থ্রো ইন হবে পা দিয়ে। কোনো ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখলে সাসপেন্ড হবেন ৫ মিনিটের জন্য, বসে থাকতে হবে সাইডলাইনে। ম্যাচ চলাকালীন ফুটবলার পরিবর্তনে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। আর বল মাঠের বাইরে গেলে বা খেলা বাধাগ্রস্ত হলে বন্ধ থাকবে ঘড়ি।

নতুন এ নিয়মগুলো এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে দর্শক-সমর্থকের মাঝে। তাদের অধিকাংশই এই নিয়মগুলোর সমালোচনা করে বলছেন, এখন যে নিয়মে খেলা চলছে সেটাই আদর্শ।

Continue Reading

ইতিহাস

কে ছিলেন আম্রপালী?

Published

on

By

আম্রপালী

বর্তমানে আম্রপালী আম আমাদের সবার প্রিয়। কিন্তু ইতিহাসেও একজন আম্রপালি ছিলেন। চলুন আজ ইতিহাসের আম্রপালী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক :

  আম্রপালী ছিলেন এমন একজন অনিন্দ্য সুন্দরী ; প্রায় ২,৫০০ বছর আগে রাষ্ট্র যাকে বানিয়েছিল নগরবধূ বা পতিতা-

স্বাদের দিক থেকে অনেকের কাছেই ‘আম্রপালী’ আম খুবই প্রিয় । আকারে ছোট কিন্তু মিষ্টির দিক থেকে যেন সকল আমকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ‘আম্রপালী’ । কিন্তু  এই আমটার নামকরণ কোথা থেকে হল জানেন ?

আম্রপালী জন্মেছিলেন আজ থেকে ২,৫০০ বছর আগে ভারতে । তিনি ছিলেন সে সময়ের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী এবং নর্তকী । তার রুপে পাগল ছিল পুরো পৃথিবী আর এই রুপই তার জন্য কাল হয়ে ওঠে । যার কারণে তিনি ছিলেন ইতিহাসের এমন একজন নারী, যাকে রাষ্ট্রীয় আদেশে পতিতা বানানো হয়েছিল !

আম্রপালী বাস করতেন বৈশালী শহরে । বৈশালী ছিল প্রাচীন ভারতের গণতান্ত্রিক একটি শহর, যেটি বর্তমানে ভারতের বিহার রাজ্যের অর্ন্তগত ।

মাহানামন নামে এক ব্যক্তি শিশুকালে আম্রপালীকে আম গাছের নিচে খুঁজে পান । তার আসল বাবা-মা কে ইতিহাস ঘেঁটেও তা জানা যায়নি । যেহেতু তাকে আম গাছের নিচে পাওয়া যায় তাই তার নাম রাখা হয় আম্রপালী । সংস্কৃতে আম্র মানে আম এবং পল্লব হল পাতা । অর্থাৎ, আমগাছের নবীন পাতা ।

কিন্তু শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা দিতেই আম্রপালীকে নিয়ে হইচই পড়ে যায় । তার রুপে চারপাশের সব মানুষ পাগল হয়ে যান । দেশ-বিদেশের রাজপুত্রসহ রাজা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ তার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে যান । সবাই তাকে একনজর দেখতে চান, বিয়ে করতে চান । এ নিয়ে আম্রপালীর মা-বাবা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন । তারা তখন বৈশালীতে সকল গণমান্য ব্যক্তিকে এর একটি সমাধান করার জন্য বলেন । কারণ, সবাই আম্রপালীকে বিয়ে করতে চান । তখন বৈশালীর সকল ক্ষমতাবান ও ধনবান ব্যক্তি মিলে বৈঠকে বসে নানা আলোচনার পর যে সিদ্ধান্ত নেন তা হল, আম্রপালীকে কেউ বিয়ে করতে পারবেন না । কারণ তার রুপ । সে একা কারো হতে পারে না । আম্রপালী হবে সবার । সে হবে একজন নগরবধু, মানে সোজা বাংলায় পতিতা ।

এটা ছিল একটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত । ইতিহাসে এভাবে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে কাউকে পতিতা বানানো হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত খুবই বিরল ! আম্রপালী সে সভায় পাঁচটি শর্ত রাখেন-

(১) নগরের সবচেয়ে সুন্দর জায়গায় তার ঘর হবে ।

(২) তার মুল্য হবে প্রতি রাত্রির জন্য পাঁচশত স্বর্ণমুদ্রা ।

(৩) একবারে মাত্র একজন তার গৃহে প্রবেশ করতে পারবেন ।

(৪ ) শক্র বা কোন অপরাধীর সন্ধানে প্রয়োজনে সপ্তাহে সর্বোচ্চ একবার তার গৃহে প্রবেশ করা যাবে ।

(৫) তার গৃহে কে এলেন আর কে গেলেন- এ নিয়ে কোন অনুসন্ধান করা যাবে না ।

সবাই তার এসব শর্ত মেনে নেন।

প্রাচীন ভারতের মগধ রাজ্যের রাজা ছিলেন বিম্বিসার । শোনা যায়, তার স্ত্রীর সংখ্যা নাকি ৫০০ ছিল ! নর্তকীদের নাচের এক অনুষ্ঠানে তিনি এক নর্তকীর নাচ দেখে বলেছিলেন, এ নর্তকী বিশ্বসেরা ।

তখন তার একজন সভাসদ বলেন- মহারাজ, এই নর্তকী আম্রপালীর নখের যোগ্য নয় !

বিম্বিসারের এই কথাটি নজর এড়ায়নি । তিনি তার সেই সভাসদের থেকে আম্রপালী সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে তাকে কাছে পাবার বাসনা করেন ।

কিন্তু তার সভাসদ বলেন, সেটা সম্ভব নয় । কারণ, তাহলে আমাদের যুদ্ধ করে বৈশালী রাজ্য জয় করতে হবে আর আম্রপালীর দেখা পাওয়াও এত সহজ নয় । দেশ-বিদেশের বহু রাজাসহ রাজপুত্ররা আম্রপালীর প্রাসাদের সামনে তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন । কিন্তু মন না চাইলে তিনি কাউকে দেখা দেন না ।

এত কথা শুনে বিম্বিসারের আগ্রহ আরও বেড়ে গেল । তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, ছদ্মবেশে বৈশালী রাজ্যে গিয়ে আম্রপালীকে দেখে আসবেন । কি এমন আছে সেই নারীর মাঝে, যার জন্য পুরো পৃথিবী পাগল হয়ে আছে !

তারপর বহু চড়াই উৎরাই শেষে তার আম্রপালীর সাথে দেখা করার সুযোগ আসে। কিন্তু দেখা করতে গিয়ে রাজা চমকে উঠেন, এত কোন নারী নয় ; যেন সাক্ষাৎ পরী !

কিন্তু অবাক রাজার জন্য আরও অবাক কিছু অপেক্ষা করছিল । কারণ, আম্রপালী প্রথম দেখাতেই তাকে মগধ রাজ্যের রাজা বলে চিনে ফেলেন এবং জানান- তিনি তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন বহু আগে থেকেই ।

এই কথা শুনে রাজা সাথে সাথে তাকে তার রাজ্যের রাজরাণী বানানোর প্রস্তাব দেন । কিন্তু আম্রপালী জানান, তার রাজ্যের মানুষ এটা কখনোই মেনে নেবেন না । উল্টো বহু মানুষের জীবন যাবে । রক্তপাত হবে । তাই রাজাকে দ্রুত এখান থেকে চলে যেতে বলেন ।

কিন্তু বিম্বিসার বৈশালী আক্রমন করে আম্রপালীকে পেতে চান । ওদিকে আম্রপালী তার নিজের রাজ্যের কোন ক্ষতি চান না । তাই তিনি রাজাকে তার নিজ রাজ্যে ফেরত পাঠান এবং বৈশালীতে কোন আক্রমণ হলে তিনি তা মেনে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন ।

এদিকে বিম্বিসারের সন্তান অজাতশত্রুও আম্রপালীর প্রেমে মগ্ন ছিলেন । তিনি বিম্বিসারকে আটক করে নিজে সিংহাসন দখল করে বসেন এবং আম্রপালীকে পাওয়ার জন্য বৈশালী রাজ্য আক্রমণ করে বসেন । কিন্তু দখল করতে সক্ষম হননি এবং খুব বাজেভাবে আহত হন । সেদিনও আম্রপালী অজাতশত্রুর বিয়ের প্রস্তাব সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন ।

এত নাটকীয়তার পর শেষের দিকে এসে কি হল ? গৌতম বুদ্ধর সময়কাল তখন । গৌতম বুদ্ধ তার কয়েকশ সঙ্গী নিয়ে বৈশালী রাজ্যে এলেন । একদিন বৈশালী রাজ্যের রাবান্দা থেকে এক বৌদ্ধ তরুণ সন্ন্যাসীকে দেখে আম্রপালীর মনে ধরে গেল । তিনি সেই সন্ন্যাসীকে চার মাস তার কাছে রাখার জন্য গৌতম বুদ্ধকে অনুরোধ করলেন । সবাই ভাবলেন, বুদ্ধ কখনই রাজি হবেন না । কারণ, একজন সন্ন্যাসী এমন একজন পতিতার কাছে থাকবেন ; এটা হতেই পারে না । কিন্তু গৌতম বুদ্ধ তাকে রাখতে রাজি হলেন এবং এটাও বললেন, আমি শ্রমণের (তরুণ সে সন্ন্যাসীর নাম ছিল) চোখে কোন কামনা-বাসনা দেখছি না । সে চার মাস থাকলেও নিষ্পাপ হয়েই ফিরে আসবে- এটা আমি নিশ্চিত !

চার মাস শেষ হল । গৌতম বুদ্ধ তার সঙ্গীদের নিয়ে চলে যাবেন । তরুণ শ্রমণের কোন খবর নেই । তবে কি আম্রপালীর রুপের কাছেই হেরে গেলেন শ্রমণ ? সেদিন সবাইকে অবাক করে দিয়ে তরুণ শ্রমণ ফিরে আসেন । তার পিছনে পিছনে আসেন একজন নারী । সেই নারীই ছিলেন আম্রপালী । আম্রপালী তখন বুদ্ধকে বলেন, তরুণ শ্রমণকে প্রলুব্ধ করতে কোনও চেষ্টা বাকি রাখেননি তিনি । কিন্তু এই প্রথম কোন পুরুষকে বশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন বৈশালীর নগরবধূ আম্রপালী । তাই আজ সর্বস্ব ত্যাগ করে বুদ্ধের চরণে আশ্রয় চান তিনি ।

পরে সব কিছু দান করে বাকী জীবন গৌতম বুদ্ধের চরণেই কাটিয়ে দেন ইতিহাস বিখ্যাত সেই রমণী আম্রপালী আর এই আম্রপালী নামেই ১৯৭৮ সালে ভারতের আম গবেষকরা ‘দশোহরি’ ও ‘নিলাম’- এই দু’টি আমের মধ্যে সংকরায়ণের মাধ্যমে এক নতুন জাতের আম উদ্ভাবন করেন এবং নাম রাখেন ‘আম্রপালী’।

Continue Reading

Trending

%d bloggers like this: