বিনোদন
২০২১ সালে হলিউড মাতাবে যেসব সিনেমা

করোনা মহামারী এবং দীর্ঘ লকডাউন কালিন সময়ে ভালো নেই চলচ্চিত্রের অবস্থা। তবে আশার কথা এই যে গেল কয়েক মাস ধরে আবারো বিভিন্ন সিনমার শুটিং শুরু হয়েছে। এবং আশা করা যাচ্ছে যে সামনে ২০২১ সালে সিনেমা গুলো হল মাতাবে।
দীর্ঘ সময় বিরতি থাকায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করতে বিশাল প্রতিযোগিতার এই বাজারে ২০২১ সালে দিকে তাকিয়ে সবাই। চলুন দেখে নেওয়া যাক চলতি বছরের হলিউডে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকা-
‘নো টাইম টু ডাই’
নো টাইম টু ডাই২০২০ সালের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা। বিশ্বের কোটি কোটি দর্শক অপেক্ষায় ছিলেন হলে গিয়ে নতুন জেমস বন্ডকে দেখবেন বলে। কিন্তু করোনার কারনে দর্শকদের সেই আশা পূরন হয়নি। কয়েক দফা মুক্তির তারিখ পিছিয়ে অবশেষে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় ২০২১ সালে মুক্তি দেওয়া হবে জিরো জিরো সেভেন ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন ছবি ‘নো টাইম টু ডাই’।
আমেরিকার ক্যারি জোজি ফুকুনাগা পরিচালিত ‘নো টাইম টু ডাই’ চলতি বছরের ২ এপ্রিল মুক্তি পেতে পারে। দুনিয়া খ্যাত জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজির পঞ্চম ও শেষবারের মতো আয়ান ফ্লেমিংয়ের বিখ্যাত ব্রিটিশ গোয়েন্দা জেমস বন্ড চরিত্রে অভিনয় করেছেন ড্যানিয়েল ক্রেগ।
‘মিশন ইম্পসিবল সেভেন’
মিশন ইমপসিবল সেভেন হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজ অভিনীত জনপ্রিয় সিরিজ ‘মিশন ইম্পসিবল’। এর সর্বশেষ দুটি কিস্তি রোগ নেশন এবং ফলআউট পরিচালনা করেছেন ক্রিস্টোফার ম্যাকক্যারি। তিনি এবার নির্মাণ করছেন সিরিজের সপ্তম পর্বটি। সিরিজের শিরোনামহীন সপ্তম চলচ্চিত্রটি টম অভিনীত সফল স্পাই ইথান হান্ট এবং তার মিত্রদের আবার ফিরিয়ে আনবে। কারণ তারা একটি নতুন শত্রুর মুখোমুখি হবে যারা বিশ্বকে বিপন্ন করে দিচ্ছে।
‘কামিং টু আমেরিকা’
কামিং টু আমেরিকা১৯৮৮ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত জনপ্রিয় সিনেমা ‘কামিং টু আমেরিকা’। এ ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিতীয় কিস্তিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে চলতি বছরের ৫ মার্চ। ক্রেইগ ব্রেকার পরিচালিত কমেডি ঘরনার সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন কেনিয়া ব্যারিস, ব্যারি ডব্লু, ব্লাস্টেইন এবং ডেভিড শেফিল্ড।
প্রেক্ষাগ্রহে মুক্তির কথা থাকলেও করোনার কারণে সিনেমাটি অ্যামাজনে মুক্তি পাবে সবার আগে।
‘দ্য কিংস ম্যান’
দ্য কিংস ম্যান গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর সিনেমাটি মুক্তির কথা থাকলেও করোনার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে কয়েক দফা মুক্তির তারিখ বদলালেও অবশেষে চলতি বছরের ১২ মার্চ মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘দ্য কিংস ম্যান’। সিনেমাটি স্পাই অ্যাকশন কমেডি ঘরনার। এটি পরিচালনা করেছেন ম্যাথু ভন। কার্ল গজডুসেকের চিত্রনাট্যে সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন রাল্ফ ফিয়েনেস, জেমমা আর্টারটন, রাইস ইফানস, ম্যাথু গুড, টম হল্যান্ডার, হ্যারিস ডিকিনসন এবং ড্যানিয়েল ব্রোহেল প্রমুখ।
‘এ কোয়াইট প্লেস পার্ট টু’
এ কোয়াইট প্লেস পার্ট টু চলতি বছর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা হরর সিনেমাগুলোর মাঝে অন্যতম ‘এ কোয়াইট প্লেস পার্ট টু’। ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘এ কোইয়াইট প্লেস’-এর সিক্যুয়াল এটি। এ ছবি নিয়ে আলোচনার শুরু গত বছর থেকেই। সিক্যুয়াল এই সিনেমাটি রচনা এবং পরিচালনা করেছেন জন ক্র্যাসিনস্কি। প্যারামাউন্ট পিকচারসের ব্যনারে সিনেমাটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে ২৩ এপ্রিল।
প্রথম পর্বের মতো এবারো অভিনয় করছেন এমিলি ব্লান্ট, মিলিসেন্ট সিমন্ডস এবং নোহ জুপে।
‘ব্ল্যাক উইন্ডো’
ব্ল্যাক উইডোমার্ভেলের প্রথম চমক হিসেবে এই বছর মুক্তি পেতে যাচ্ছে নারী সুপারহিরোভিত্তিক সিনেমা ‘ব্ল্যাক উইন্ডো’। মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের (এমসিইউ) ২৪তম এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন কেট শর্টল্যান্ড। বরাবরের মতো এবারো কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন নাতাশা রোমানফ। ৭ মে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
‘গডজিলা ভার্সেস কং’
গডজিলা ভার্সেস কং বহুল আলোচিত এবং প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘গডজিলা ভার্সেস কং’। অবশেষে মুক্তি পেতে যাচ্ছে এই বছরের ২১ মে। একইসঙ্গে এটি দেখতে পাওয়া যাবে ওটিটি প্লাটফর্ম এইচবিও ম্যাক্স এবং প্রেক্ষাগৃহে।
অ্যাডাম উইংগার্ড পরিচালিত একটি আসন্ন আমেরিকান মনস্টার ঘরনার সিনেমা এটি। গডজিলা ফ্র্যাঞ্চাইজির ৩৬তম নির্মাণ। সিনেমাটির স্বত্ব কেনার জন্য প্রায় ২০০ মিলিয়নের প্রস্তাব করেছিল নেটফ্লিক্স। তবে এর অনেক আগেই সিনেমাটির সম্প্রচার সত্ব এইচবিও ম্যাক্সের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
‘জাঙ্গল ক্রুজ’
জাঙ্গল ক্রুজ গত বছরই ছবিটির মুক্তির কথা ছিলো। কিন্তু করোনার কারণে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে ডিজনি। জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জুলাই সিনেমাটি হলে আসতে পারে। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ‘দ্য রক’ খ্যাত বিখ্যাত তারকা ডোয়াইন জনসন ও হলিউডের আরেক বিখ্যাত অভিনেত্রী এমিলি ব্লান্ট। আরও আছেন জ্যাক হোয়াইটহল, অ্যাডগার রামরেজ, জেসি প্লিমোনস পল গিয়াম্যাটি।
‘ফার্স্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস নাইন’
আবারো আসছে ভিন ডিজেল অভিনীত ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ সিরিজের সিনেমা। এবার মুক্তি পাচ্ছে নবম কিস্তি। গত বছরের মে মাসে ছবিটি মুক্তির কথা ছিলো। বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। বিগত সিরিজে অভিনয় করে আসা ভিন ডিজেল, মিশাল রদরিগাসের সঙ্গে এবার দেখা মিলবে সুপারস্টার রেসলার জন সিনার।
সবকিছু ঠিক থাকলে গতি আর রোমাঞ্চে ভরপুর ‘এফ নাইন’ হলে আসবে ২৮ মে।
এছাড়াও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মুক্তি পাবে ‘দ্য হোয়াইট টাইগার’, ফেব্রুয়ারি মাসে মুক্তি পাবে ‘সিনড্রেলা’, ‘চেরী’, ‘টম এন্ড জেরি’, মার্চে আসবে ‘চাওস ওয়াকিং’, ‘রায়া এন্ড দ্য লাস্ট ড্রাগন’, ‘মরবিউস’, এপ্রিলে মুক্তি পাবে ‘লাস্ট নাইট ইন সোহো’, মে মাসে ‘ব্ল্যাক উইডো’, ‘এফ নাইন’ ও ‘গডজিলা ভার্সেস কং’র সঙ্গে দর্শক দেখতে পারবেন ‘ফ্রি গাই’, ‘ক্রয়েলা’ ছবি দুটিও।
জুন মাসে মুক্তি পাওয়ার তালিকায় আছে ‘গোস্টবাস্টার্স : আফটার লাইফ’, ‘লুকা’, ‘ভেনম : লেট দেয়ার বি কারনেজ’, জুলাই মাসে আসবে ‘টপ গান : মারভিক’, ‘মিনিয়নস : দ্য রাইজ অব গ্রু’, ‘স্পেস জ্যাম : এ নিউ লিগেসি’, ‘শাং-চাই এন্ড দ্য লিজেন্ড অফ দ্য টেন রিংস’, ‘আনচার্টেড’, ‘দ্য টুমোরো ওয়ার’, আগস্ট মাসের তালিকায় আছে ‘দ্য সুইসাইড স্কোয়াড’, সেপ্টেম্বরে ‘রেসিডেন্ট এভিল’, ‘ডেথ অন দ্য নাইল’, অক্টোবরে ‘ধুনে’, ‘দ্য লাস্ট ডুয়েল’, ‘স্নেক আইস’, নভেম্বরে ‘ইটারনালস’, ‘এনকান্তো’, ডিসেম্বরে মুক্তি পেতে পারে ‘ওয়েস্ট সাইড স্টোরি’, ‘স্পাইডার ম্যান থ্রি’ ‘ব্যাবিলন’ ইত্যাদি ছবিগুলো।

তখন মেয়েটির বয়স সবে সাত বছর। মায়ের সঙ্গে সে হাঁটতে বের হয়। তবে কিছুতেই মায়ের হাত ধরবে না। নিজের খেয়াল মতো রাস্তা পার হতে গিয়ে ভয়ঙ্কর এক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সে। ছোট্ট শরীরটাকে ধাক্কা মারার পর ঠেলতে ঠেলতে ১০০ ফুট দূরে নিয়ে গিয়েছিলো একটি গাড়ি। ২০১৬ সালে ঘটানাটি ঘটে। পথচলতি লোকেরা চিৎকার করে ওঠে। মাথা চাপড়াতে চাপড়াতে ছুটে যায় মেয়েটির মা। তিনি ও বাকি সবাই নিশ্চিত ছিলেন যে, মেয়েটি আর বেঁচে নেই। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে মেয়েটি উঠে দাঁড়িয়ে মায়ের কাছে ফিরে আসে। তার মুখে একটুও ভয় বা আতঙ্ক নেই। মেয়ের হাসিমুখের অভিব্যক্তি দেখে তার মায়ের মনে হচ্ছিল সে বলতে চাইছিলো,‘কী হয়েছে এত চিন্তার কী আছে?’
ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তার শরীরে কয়েকটি আঁচড়ের দাগ ছাড়া আর কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুরো শরীর স্ক্যান করেও ভেতরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ডাক্তাররা নিশ্চিত হলেন কোনো অবস্থাতেই মেয়েটি যন্ত্রণা অনুভব করে না। শুধু ব্যথা নয় খিদে এমনকি ঘুমও আসে না তার। অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, সত্যিই এমন এক মেয়ে আছে এই বিশ্বে। তার নাম অলিভিয়
২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের কাছে হাডারফিল্ড নামের শহরের ফার্নসওয়ার্থ নামক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গৃহকর্তা রিড, তার স্ত্রী নিকি ও তাদের পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে গড়া সাধারণ মধ্যবিত্ত এক ব্রিটিশ পরিবার। পৃথিবীর অধিকাংশ চিকিৎসক আজ এই পরিবারটিকে চেনেন। এর কারণ হলো তাদের দ্বিতীয় মেয়ে অলিভিয়া।
১০ বছর বয়সী অলিভিয়া পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। অলিভিয়ার এমন তিনটি বৈশিষ্ট্য আছে যা পৃথিবীতে আর কারও নেই। যা ওই অতি ক্ষুদ্র মেয়েটিকে করে তুলেছে অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন। ছোট্ট অলিভিয়া দিনের পর দিন না খেয়ে, না ঘুমিয়ে থাকতে পারে এবং যত বড় আঘাতই পাক না কেন অলিভিয়ার যন্ত্রণা লাগে না। ১০ বছরের জীবনে একদিনও কাঁদেনি অলিভিয়া।
ফার্নসওয়ার্থ পরিবারে দ্বিতীয় কন্যা ফুটফুটে অলিভিয়া। কয়েক মাসের মধ্যে বাবা-মা তাদের মেয়ের অলিভিয়ার কাণ্ড দেখে আতঙ্কিত হলেন। ছুটলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারকে বলেন, তাদের মেয়ে অলিভিয়া খিদে পেলে কাঁদে না, দিনে রাতে একদম ঘুমায় না, কোনো ধরনের আঘাত পেলেও কাঁদে না। ডাক্তার হেসে দম্পতিকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, এটা স্বাভাবিক। আপনারা বেশি খাইয়ে দিচ্ছেন তাই ক্ষুধায় কাঁদছে না। আর ঘুমটা নিয়ে সব বাবা-মা’র চিন্তা, ওটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। কিছুদিন পরেই ঠিক হয়ে যাবে।
ধীরে ধীরে বড় হয়েছে অলিভিয়া, মা-বাবা খিদের জ্বালায় মেয়ে কাঁদে না দেখে বাবা-মা তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করতেন। অনেক চেষ্টার পরও অলিভিয়া যদিও সামান্য কিছু খেতো, কিন্তু কখনো ঘুমোতে চাইতো না। সারাক্ষণ তাকে নিয়ে খেলতে হতো। পরিবারের সবাই যখন ঘুমে মগ্ন থাকে অলিভিয়া তখন ছোট্ট পায় টলতে টলতে সারা বাড়ি জুড়ে সারা রাত ধরে ঘোরাঘুরি করতো। বাধ্য হয়ে বাবা-মা রাতে শিশু অলিভিয়াকে একটি খালি ঘরে খেলনা দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতেন। তাদেরও তো ঘুমোতে হবে, না ঘুমিয়ে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন।
ডাক্তার বললেন, এক জটিল গঠনগত ত্রুটির শিকার হয়েছে অলিভিয়া। তবে এক বছরের মধ্যেও অলিভিয়ার এই সব অভ্যাসের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই অন্য এক ডাক্তারের কাছে যান তার বাবা-মা। সব শুনে সেই ডাক্তার অলিভিয়াকে পাঠিয়েছিলেন একটি ল্যাবরেটরিতে। সেখানে অলিভিয়ার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান তার বাবা-মা। রিপোর্টটি দেখে ডাক্তারের মুখ বিমর্ষ হয়ে যায়। সে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ফোন করেন। এরপর ডাক্তার রিপোর্টটি পাঠিয়েছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে।
কয়েকদিন পর অলিভিয়ার বাবা-মাকে ডাক্তার বলেন, আসলে অলিভিয়া ক্রোমোজোম সিক্স পি ডিলেশন নামক একটি জটিল গঠনগত ত্রুটির শিকার। তাই অলিভিয়ার ক্ষুধা ও ঘুম পায় না। অলিভিয়ার বাবা-মাকে ডাক্তার বলেছিলেন, এ রোগের কোনো ওষুধ নেই। অলিভিয়াকে বাঁচাতে গেলে তাকে সময়ে সময়ে খাইয়ে দিতে হবে, কিন্তু ঘুমের জন্য কিছু করতে পারবো না। কারণ এইটুকু মেয়েকে ঘুমের ওষুধ দেয়া যাবে না। যেহেতু না ঘুমিয়েও সে সুস্থ আছে তাহলে সেভাবেই তাকে থাকতে দিন। কী এই ক্রোমোজোম সিক্স পি ডিলেশন? মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় ভ্রুণের কোষগুলো বারবার বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ তৈরি করতে থাকে, ফলে গর্ভস্থ সন্তানের দেহে কোষের সংখ্যা দ্রুত ও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অলিভিয়া যখন মায়ের পেটে বেড়ে উঠছিলো, তার কোষের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছিলো।
তবে বিভাজনের ত্রুটির জন্য অলিভিয়ার দেহের কোষগুলোতে সিক্স পি নামক ক্রোমোজোম উপাদানটি ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই ভূমিষ্ঠ হয় অলিভিয়া। তবে কোষের ত্রুটি স্থায়ীভাবেই থেকে গিয়েছিলো অলিভিয়ার দেহে। অলিভিয়ার দেহ থেকে সিক্স পি নামক ক্রোমোজোম মুছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অলিভিয়ার খিদে, ঘুম এবং ব্যথা পাওয়ার অনুভুতিও তার জীবন থেকে মুছে যায়।
অপমান করলে ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয় অলিভিয়া। ডাক্তারের কথা মতো, অলিভিয়ার বাবা-মা মেয়েকে বড় করতে থাকেন। তারপর অলিভিয়া স্কুলে ভর্তি হয়। দিন-রাত জেগে থেকেও স্কুলের মেধাবী ছাত্রী সে। পরীক্ষায় অলিভিয়ার নাম্বার সবচেয়ে বেশি থাকে। খেলাধুলাতেও সে স্কুলে পিছিয়ে থাকে না। তবে শান্ত ও হাসিখুশি অলিভিয়ার একটাই দোষ, কেউ তাকে অপমান করলে সে ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তখন অলিভিয়া আক্রোশবশত কোনো জিনিস দিয়ে আঘাত করে সেই মানুষটিকে বা নিজের মাথা দেওয়ালে ঠোঁকে।
সাইকোলজিস্ট, সাইক্রিয়াটিস্ট কিছুই বাদ দেননি অলিভিয়ার বাবা-মা। কিন্তু তারা বলেছিলেন,তাদের কিছু করার নেই। এসব হচ্ছে অলিভিয়ার ক্রোমোজোমের গঠনগত সমস্যার উপসর্গ। ওষুধ দেয়া যাবে না কারণ অলিভিয়া ওইটুকু সময় বাদ ছাড়া বাকি সময় সম্পূর্ণ সুস্থ ও হাসিখুশি থাকে। ধরা পড়েছিল অলিভিয়ার আরেক অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য রোজ বিকেলে বাড়ির সামনের পার্কে তার ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলা করতে যেতো অলিভিয়া। একদিন অলিভিয়া একা গিয়েছিলো পার্কে।
সেখান থেকে ফেরার পর অলিভিয়াকে দেখে আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠেছিলেন মা নিকি। অলিভিয়ার নিচের ঠোঁটের অর্ধেকটা কেটে ঝুলছিল। জামা রক্তে ভেজা, কিন্তু অলিভিয়ার মুখে হাসি। আতঙ্কিত মায়ের পাশ দিয়ে ঘরে ঢুকে জুতো খুলতে শুরু করেছিলো অলিভিয়া। মুখে একটুও ব্যথার অভিব্যক্তি ছিল না তার।
হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল অলিভিয়াকে, প্রথমে স্টিচ ও পরে প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়। পুরো সময়টিতে একটু কাঁদেনি অলিভিয়া। হাসিমুখে ইনজেকশনের পর ইনজেকশন নিয়েছিলো। ডাক্তাররা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ‘ইস্পাত’ কঠিন মানসিকতার মেয়েটিকে দেখে। তারপরে অসংখ্য বার আঘাত পেয়েছে অলিভিয়া। কিন্তু তার মুখ থেকে একবার ‘আহ” শব্দটিও বের হয়নি।
অলিভিয়া পৃথিবীর একমাত্র ‘সুপার হিউম্যান’ এই দুর্ঘটনার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডাক্তারদের সঙ্গে অলিভিয়ার ডাক্তারদের ফোন এবং ই-মেল চালাচালি এবং পৃথিবীব্যাপী সার্ভে রিপোর্টের আদানপ্রদান শুরু হয়েছিলো। কিছুদিন পরে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা অলিভিয়াকে পৃথিবীর প্রথম ‘বায়োনিক চাইল্ড’ ঘোষণা করেছিলেন। এর অর্থ হলো অলিভিয়া অস্বাভাবিক ক্ষমতাযুক্ত একটি শরীর ও মন নিয়ে জন্মেছে, এই পৃথিবীতে অলিভিয়ার মতো সহ্যশক্তি আর কারো নেই।
অলিভিয়া কয়েকমাস না ঘুমিয়ে, কয়েক সপ্তাহ না খেয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে, আর তার শরীর যেকোনো আঘাত ও যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে ঠিক রোবটের মতো। এই তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্মিলিতভাবে বিশ্বে আর কোনো মানুষের দেহে কখনো দেখা যায়নি। সারা পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খুঁজে আজ অবধি ১০০ জনকে পাওয়া গেছে যাদের সিক্স পি নামক ক্রোমোজোম ব্যাধিগ্রস্ত আছে। কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে অলিভিয়াই প্রথম মানুষ যার শরীরে কোন ব্যথা, ঘুম,ক্ষুধা নেই এই তিনটি উপসর্গই আছে। ভাবলেই অবাক লাগে শারীরিক ত্রুটি আজ লৌহমানবী অলিভিয়াকে বিশ্ব বিখ্যাত করে তুলেছে। করে তুলেছে বিশ্ব ইতিহাসের প্রথম সুপার হিউম্যান।
~সংগৃহীত
বিনোদন
৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড হবে মাত্র এক সেকেন্ডেই!
প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার জুড়ে ৩১৯ টেরাবাইট প্রতি সেকেন্ডের ইন্টারনেট গতির নজির সৃষ্টি হয়েছে জাপানে

শুনতে নিশ্চয়ই অবাক লাগছে যে, ৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড করতে পারেন এক সেকেন্ডে একটা ক্লিক করলেন। ব্যাস, ছবি সেভের মতো মুভি সেভ হয়ে গেল। তাও আবার 8K-তে। তবে শুধু একটাই নয়। চাইলে আপনি ৫০ হাজার এমন সিনেমা ডাউনলোড করতে পারেন। এক সেকেন্ডেই!
এমনই অকল্পনীয় দ্রুত গতির ইন্টারনেটের জন্য বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি। প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার জুড়ে ৩১৯ টেরাবাইট প্রতি সেকেন্ডের ইন্টারনেট গতির নজির সৃষ্টি হয়েছে জাপানে।
এর আগে বিশ্বের সর্বাধিক দ্রুত ইন্টারনেট স্পিড ছিল ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের। সেখানে গবেষকরা ১৭৮ টিবিপিএস-এর রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন। এবার তার প্রায় দ্বিগুণ গতির ইন্টারনেট জাপানে।
প্রতি সেকেন্ডে ৩১৯ টেরাবাইট চলুন এতো দ্রুত গতি সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক :
একটি টেরাবাইট মানে ১,০০০ গিগাবাইট। এক গিগাবাইট মানে ১০২৪ মেগাবাইট। ২০২০ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বাধিক মোবাইল ব্রডব্যান্ডের স্পিডের রেকর্ড রয়েছে। সেটি প্রায় ১০০ এমবিপিএস (প্রতি সেকেন্ডে মেগাবাইট) ছিল। বিশ্বের সর্বোচ্চ ফিক্সড-লাইন ব্রডব্যান্ড গতির রেকর্ড রয়েছে সিঙ্গাপুরে।(২০১৫ এমবিপিএস) । থিয়োরেটিকালি ১৭৮ টিবিপিএস-এ, মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো নেটফ্লিক্স ডাউনলোড করা সম্ভব। এদিকে নতুন রেকর্ডে স্পিড ৩১৯ টিবিপিএস। অর্থাত্ পুরো নেটফ্লিক্স ২ বার ডাউনলোড করে ফেলা যাবে এক সেকেন্ডে। নাসার সিস্টেম ৪০০ গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ডের গতিতে চলে।
কিন্তু এত গতি দিয়ে কী হবে?
না, সিনেমা ডাউনলোডের জন্য এত গতি মোটেও নয়। আসলে দ্রুত ডেটা ব্যাক আপ, আপডেট ইত্যাদি ক্ষেত্রে এই ধরণের দ্রুত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তথ্যাবলী, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, মহাকাশ অভিযানের ডেটা স্ট্রিমিং ও আপডেট, প্রচুর তথ্যের ব্যাক আপ নেওয়া ইত্যাদি কাজে এ ধরণের দ্রুতগতির ইন্টারনেট প্রয়োজন।
খেলাধুলা
কি কি থাকছে ফিফার নতুন নিয়মে?

বদলে যাচ্ছে ফুটবলের নিয়ম। খেলাটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে ৯০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। থাকবে ইচ্ছেমতো ফুটবলার পরিবর্তনের সুযোগ। হলুদ কার্ড দেখলে সাসপেন্ড হবেন খেলোয়াড়রা, সাইডলাইনে বসে থাকতে হবে ৫ মিনিট। এমন বেশকিছু নতুন নিয়ম অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টুর্নামেন্ট ফিউচার অব ফুটবল কাপে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবর্তন করেছে ফিফা। এখনো কিছু চূড়ান্ত না হলেও এরই মধ্যে ভক্তদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুতেই এসেছে পরিবর্তন। খেলাধুলাও এর বাইরে নয়। দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না করছে খেলার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো।
টি-২০ ফরম্যাট বিশ্ব ক্রিকেটে যোগ করে নতুন মাত্রা। এবার ফুটবলও সে পথে হাঁটছে। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবলে নতুন কিছু সংযোজনের ক্ষমতা আছে শুধু তাদেরই। ফুটবলকে আরও আকর্ষণীয় করতে বেশকিছু নিয়মে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে তারা।
ইউরোপের চারটি ক্লাব পিএসভি, আজেড আল্কমার, লাইপজিগ ও ক্লাব ব্রুজের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের একটি টুর্নামেন্ট চলছে। ফিউচার অব ফুটবল কাপ নামে সেই টুর্নামেন্টে কিছু নিয়মে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তন এনেছে ফিফা। এমন খবর দিয়েছে ইউরোপের বেশকিছু সংবাদমাধ্যম। যদিও ফিফার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তবে খবর প্রচারের পর তা নিয়ে কোনো আপত্তিও জানায়নি ফিফা।
নতুন সেই নিয়মগুলো কি? সবার আগে খবরটি প্রচার করে খেলাধুলাবিষয়ক স্পেনের শীর্ষ পত্রিকা মুন্ডো দেপোর্তিভো। তারা বলছে, প্রস্তাবিত নিয়মে ৯০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। প্রতি অর্ধে খেলা হবে ৩০ মিনিট। থ্রো ইন হবে পা দিয়ে। কোনো ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখলে সাসপেন্ড হবেন ৫ মিনিটের জন্য, বসে থাকতে হবে সাইডলাইনে। ম্যাচ চলাকালীন ফুটবলার পরিবর্তনে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। আর বল মাঠের বাইরে গেলে বা খেলা বাধাগ্রস্ত হলে বন্ধ থাকবে ঘড়ি।
নতুন এ নিয়মগুলো এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে দর্শক-সমর্থকের মাঝে। তাদের অধিকাংশই এই নিয়মগুলোর সমালোচনা করে বলছেন, এখন যে নিয়মে খেলা চলছে সেটাই আদর্শ।
-
বিনোদন2 years ago
৫০ হাজার সিনেমা ডাউনলোড হবে মাত্র এক সেকেন্ডেই!
-
ইতিহাস2 years ago
রহস্যময়ী ক্লিওপেট্রা
-
আন্তর্জাতিক2 years ago
বিশ্বজুড়ে বিয়ের যত আজব অদ্ভুত রীতিনীতি
-
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি2 years ago
মোবাইল ফোন আসল না নকল বুঝবেন যেভাবে
-
খেলাধুলা2 years ago
প্রথম জয়ের স্বাদ পেল আর্জেন্টিনা
-
জাতীয়2 years ago
‘পরীক্ষা এক বছর না দিলে শিক্ষার্থীদের জীবনে এমন কোনো বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে না’
-
সর্বশেষ2 years ago
আনারসের পাতা থেকে তৈরী হচ্ছে ড্রোন
-
আন্তর্জাতিক2 years ago
দ্য চেঞ্জ মেকার : এরদোয়ান