Connect with us

আন্তর্জাতিক

দ্য চেঞ্জ মেকার : এরদোয়ান

Published

on

আরো প্রায় সাড়ে চার যুগ আগের কথা তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে রুটি আর শরবত বিক্রি করতেন এক সুদর্শন যুবক। সেখান থেকে যে টাকা লাভ হতো তা দিয়ে নিজের পড়ালেখার খরচ চালাতেন পাশাপাশি ভাই-বোনের পড়ালেখার খরচও চালাতেন। এরপরও যদি কিছু টাকা থেকে বেঁচে যেতো সে টাকা দিয়ে বই কিনতেন। এভাবে ছাত্র বয়সে তার একটা বিশাল লাইব্রেরিও হয়ে গেল, অবসর সময় বইয়ের সাথে কাটাতেন। অবশ্য ভালো ফুটবলও খেলতেন, বিভিন্ন ক্লাব থেকে ডাক পরতো খেলার জন্য। ছোটকালে স্বপ্ন দেখতেন বড়ো হয়ে একজন ফুটবলার হবেন। কিন্তু মা-বাবা বলতেন- না, তুমি পড়ালেখা কর, বড়ো হয়ে ভালো চাকুরি করবে। ছেলেটি বড়ো হয়ে না হলো তার স্বপ্নের ফুটবলার না হলো বাবা মায়ের স্বপ্নের চাকুরিজীবি! অথচ হয়ে গেল, একটি জাতির চেঞ্জ মেকার। কোটি কোটি মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাসের আশ্রয়স্থল!

নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝে গেলেন কার কথা বলছি! হ্যা, বলছি তুরস্কের রিসেফ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের কথা।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪, রবিবারে তানযিলে হানিম ও আহমদ এরদোয়ান দম্পত্তির কোল আলোকিত করে জন্ম নেন এক ফুটফুটে সন্তান। আরবিতে তখন রজব মাস। তাই বাবা-মা আরবি মাসের সাথে মিল রেখে রেজেপ, দাদার নাম থেকে নেয়া তায়্যিপ আর বংশীয় উপাধি এরদোয়ান যোগ করে শিশুটির নাম রাখেন ‘রেজেপ তায়্যিপ এরদোয়ান’।

সংসারে টানাপোড়নের মধ্যেই এরদোয়ানকে বড়ো হতে হলো, পিয়ালেপাশা প্রাইমারি স্কুলেই এরদোয়ানের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতেখড়ি। এরদোয়ান ক্লাসে যেমন ছিলেন মেধাবী, তেমন ছিলেন উত্তম আমলধারী। একদিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে ঢুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ নামাজ পড়াতে পারবে?” পুরো ক্লাসে মাত্র একজন শিক্ষার্থী সাহস করে হাত তুললেন, এবং নামাজ পড়ালেন। ছাত্ররা তখন তাঁকে রীতিমতো ‘হুজাম’ বলে ডাকতো। অর্থাৎ বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় ‘আমাদের শিক্ষক’। ছোটবেলায় হুজাম উপাধি পাওয়া ছেলেটাই আজকের রিসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান। পড়ালেখার পাশাপাশি তাঁকে ইস্তাম্বুলের রাস্তায় রুটি আর শরবত বিক্রি করতে হতো কারণ পরিবারে তখন টানাপোড়েনের মধ্যেই যাচ্ছে, একবেলা খাচ্ছে তো অন্যবেলা না খেয়ে আছে।

প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর একবার এক মাদ্রাসা কর্তৃক আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এরদোয়ান বলেন,

“যখন বাল্যকালে আমি মাদ্রাসাতে পড়তে যেতাম, তখন আমার এলাকার কিছু মানুষ আমাকে বলতেন;

‘বেটা! কেন নিজ হাতে তোমার ভবিষ্যত খারাপ করছো? তুমি কি বড়ো হয়ে মুর্দা (মৃতদেহ) নাহলানোর (গোসল করিয়ে পাক করে দেওয়া) কাজ করবে?

মাদ্রাসার ছাত্রদের গোসল করানো ছাড়া আর কী কোনো কাজ জোটে? তাই তোমাকে বলছি কোনো ভালো স্কুলে ভর্তি হয়ে যাও আর নিজের ভবিষ্যত তৈরী করার চিন্তা ভাবনা করো।’ আমাকে এই রকম যারা উপদেশ দিতেন তারা বেশীরভাগই বয়স্ক-বৃদ্ধ হতেন। তাই আমি তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বগলে বই দাবিয়ে ‘মাদ্রাসা ইমাদুল খতিব’ এর পথে হাঁটা দিতাম আরবি শিখতে।”

এরদোয়ানের পিতা একজন ফল বিক্রেতা ছিলেন। তাঁদের আর্থিক স্বচ্ছলতা টানাপোড়েন মধ্যে থাকায় কোনো কোনো দিন ‘তরকারীর’ পরিবর্তে ‘তরমুজ’ দিয়ে রুটি খেতে হতো। বাবা-মায়ের দ্বীন-ইসলামের প্রতি টান ছিলো। তাই উনারা এরদোয়ানকে ‘কোরআনে হাফেজ’ করার জন্য মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন।

পরবর্তীতে একইসময়ে ইমাম হাতিব স্কুল এন্ড কলেজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত কিছু বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য এরদোয়ান আইয়্যূব কলেজে ভর্তি হন। কেননা সে সময় ইমাম হাতিব কলেজ থেকে দ্বাদশ পাশ করার পর সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ ছিলো না। ইমাম হাতিব কলেজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে এবং অতিরিক্ত বিষয়গুলোতে পাঠ নেয়া শেষ করেই কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদন করা যেত। ১৯৭৩ সালে এরদোয়ান অতিরিক্ত বিষয়গুলো সফলতার সাথে শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি ও ব্যবসা শিক্ষা ইনিস্টিউটে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন।  পরবর্তীতে বিশ্বিবদ্যালয়টি মারমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হয়। এরদোয়ান একইসময়ে কুরআনে হাফেজও হন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন।

এরদোয়ান বলেন, “আমি তুর্কির প্রসিদ্ধ ‘মারমারাহ ইউনির্ভাসিটি’তে ভর্তি হলাম। সেখান থেকে আমি ‘অর্থশাস্ত্র এবং প্রশাসনিক বিজ্ঞানে’ মাস্টার ডিগ্রী অর্জন করলাম। কিন্তু প্রাসঙ্গিক শিক্ষা মাদ্রাসা থেকেই অর্জন করেছি।”

এরদোয়ান ছাত্র জীবনে শুধু পড়ালেখায় ব্যস্ত ছিলেন না, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম, কুরআন তেলাওয়াত, আযান, খেলাধুলা-সহ নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তেরজুমান নামক পত্রিকার আয়োজনে কবিতা আবৃত্তিতে পুরো তুরস্কে এরদোয়ান প্রথম হয়েছিলেন। পরের বছর কলেজ লেভেলেও প্রথম হয়েছিলেন।

তরুণ বয়সে ফুটবলার হিসেবেও এরদোয়ানের দারুণ খ্যাতি ছিলো। তিনি একজন প্রোফেশনাল ফুটবলারও ছিলেন। ১৪ বছর বয়সে কাছিমপাশা জামিয়ালিন্ট ক্রীড়া ক্লাবের সদস্য হিসেবে তিনি বেশ নামকরা ফুটবলার ছিলেন। সেখানে তিনি সাত বছর খেলেছেন। পরবর্তীতে ইস্তাম্বুলের অন্যতম প্রসিদ্ধ টিম আইইটিটির ফুটবল টিমে যোগদান করেন। সেখানে দীর্ঘদিন ক্যাপ্টিনের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মাঠে তাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে ইস্তাম্বুল যুব ক্লাব তাঁকে আমন্ত্রণ জানান এবং পরবর্তীতে জাতীয় যুব ফুটবল ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে তিনি নির্বাচিত হন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো সেখানে যোগ দিতে হলে অভিভাবক হিসেবে বাবার স্বাক্ষর লাগবে, কিন্তু বাবা দিলেন না অনুমতি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন, “তোমাকে পড়ালেখা করে বড়ো হতে হবে, ভালো চাকরি করতে হবে। খেলোয়াড় নয়।” শেষ পর্যন্ত এরদোয়ান আর খেলোয়াড় হতে পারলেন না।

স্কুল জীবনে থাকাকালীন এরদোয়ানের মধ্যে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা দৃশ্যমান ছিলো৷ স্কুলে পড়ার সময় তুরস্কের ইসলাম প্রিয় ছাত্রদের সংগঠন মিল্লি তুর্ক তালেবে বিরলিয়িতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ছাত্র সংগঠনে

এরদোয়ানের হাতেখড়ি। পরবর্তীতে সত্তর দশকে এরদোয়ান, নাজিমুদ্দিন আরবেকানের নেতৃত্বে ‘হিজবুল খালাসিল ওয়াতানি’ দলে যোগ দেন। কিন্তু ১৯৮০সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর তুরস্কের সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে এরদোয়ান ‘হিজবু রাফাহ’ দলে যোগ দেন। পরবর্তীতে ‘হিজবুর রাফাহ’র পক্ষ থেকে ইস্তাম্বুলের মেয়র পার্থী হিসেবে মনোনিত হন। এখানে একটা ইন্টারেস্টিং ইমানদারি ঘটনা রয়েছে! এরদোয়ান ভোটের দিন সকালবেলা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাঁর এজেন্টকে নিজেদের অবস্থা সম্পর্কে না জানতে চেয়ে বরং প্রশ্ন করল, “ফজর নামাজ পড়েছ?”কেন্দ্রের এজেন্ট বলল- না, ব্যস্তার জন্য নামাজ পড়তে পারি নাই। এরদোয়ান তাৎক্ষণাৎ বলে উঠল, “তাড়াতাড়ি নামাজ পড়ো, আমরা এবার জিতলে না পারলে পরেরবার পারবো কিন্তু আজকের নামাজ আর ফিরে আসবে না।” ভাবা যায়, কতটা আল্লাভীরু হলে এমন হতে পারেন। আর আমাদের নেতারা হলে, কেন্দ্রে গিয়ে আগে জিজ্ঞেস করতো, ভোটে আমাদের খবর কী, পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে!

এরদোয়ান ভোটে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়র হওয়ার পর এক রাজনৈতিক সমাবেশে একটি ইসলামি কবিতা পাঠ করার কারণে তাঁকে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেয়ার অভিযোগে কারাগারে যেতে হয়।

তুর্কি ভাষায় কবিতাটির অনুবাদ এরকম-

“মিনার আমাদের বেয়নেট

গম্বুজ আমাদের শিরস্ত্রাণ,

মসজিদ আমাদের ব্যারাক

মুমিনরা আমাদের সৈনিক।”

মেয়র থাকাকালীন তিনি ঘনবসতিপূর্ণ শহর ইস্তাম্বুলে ট্রাফিক জ্যাম এবং বায়ু দূষণ রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। অল্পসময়ের মধ্যে ইস্তাম্বুলকে আধুনিক শহরে রুপান্তরিত করতে চেঞ্জ মেকার হিসেবে কাজ করেন। তিনি যখন জানতে পারলেন, কিছুক্ষণ পর তাঁকে এরেস্ট করা হবে তখনও তিনি কাজ বন্ধ করেননি, বিচলিত হননি। বরং কারাগারে যাওয়ার পথেও নগরবাসিকে আশ্বাস দিয়ে গেছেন, “আপনারা কেউ হতাশ হবেন না, কাজ বন্ধ করবেন না, আমি আপনাদের ভোটে নির্বাচিত মেয়র, ইনশাআল্লাহ আমি আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসবো।”

২০০২ সালে আব্দুল্লাহ গুলের নেতৃত্বে থাকা একেপি যোগ দেন। এবং তাঁরা ঐ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় লাভ করে সরকার গঠন করেন। এখন পর্যন্ত টানা ২০ বছর একেপি ক্ষমতায় রয়েছে। এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন দীর্ঘসময়। তারপর ২০১৭ সাল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সময় পর্যন্ত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এরদোয়ান তুরস্কের সামাজিক, অর্থনৈতিক-সহ সব খাতে ঐতিহাসিক উন্নয়ন করেন। সেই সাথে বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কও জোরদারভাবে করেন। বিশেষ করে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সাথে ভিসা, সীমান্ত ইত্যাদি বিষয়ে শিথিল করেন। তুরস্ককে সারাবিশ্বের রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করান। ভঙ্গুর তুরস্ক তাঁর নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মাথা উঁচু করে। তিনি মজলুমদের কণ্ঠস্বর। মানবতাকামিদের আশ্রয়স্থল, ন্যায়ের প্রতিক।

এরমধ্যে এরদোয়ান ২৩ বছর বয়সে ১৯৭৮ সালের ৪ জুলাই, এমিনে গুলবারান নামক গুণবতী এক নারীকে বিয়ে করেন। তুরস্কে বিদ্যমান সংস্কৃতি অনুযায়ী বিয়ের পর স্ত্রীদের নামের পাশে স্বামীর বংশীয় নাম যুক্ত হয়। সেখান থেকে এমিনে এরদোয়ান। এ দম্পতির কোল জুড়ে জন্ম নেন দুই ছেলে ও দুই মেয়ে অর্থাৎ তাঁরা চার সন্তানের বাবা-মা। বিয়ের সময় এমিনে যুব মহিলা সংগঠনের দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি তুরস্কের উসকুদারে আইডিয়ালিস্ট কাদিনলার ডেয়ারনেয়ি’ -এর বিকল্প সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তবে এরদোয়ানকে সারাবিশ্বের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ও শক্তিশালী নেতা করেছে ২০১৬ সালে ‘তুরস্কের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান’। যখন প্রথম তুরস্কে অভ্যুত্থানের খবর ছড়িয়ে যায়, তখন কয়েক ঘণ্টা ধরে দেশটির নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহী সেনাদের হাতেই বলে বহির্বিশ্বের গণমাধ্যম প্রচার করতে থাকে। রাজধানী আঙ্কারা-সহ সবচেয়ে বড়ো শহর ইস্তাম্বুলের প্রধান প্রধান স্থাপনাগুলোতে ছিল তাদের দৃশ্যমান উপস্থিতি। অল্পসময়ের ব্যবধানে তুর্কী টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দখল করে নেয় বিদ্রোহী  সেনাবাহিনী এবং তাদের সম্প্রচারও বন্ধ করে দেয়া হয়। এত ঘটনার মধ্যে কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের।

অভ্যুত্থানকারীদের সেই মুহূর্তে দরকার ছিল সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ অংশের এবং জনগণের সমর্থন। কিন্তু অভ্যুত্থানের চেষ্টা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলডিরিম তা প্রতিরোধের চেষ্টা শুরু করেছেন। তবে তুরস্কের বেশিরভাগ মানুষ জানে, প্রকৃত ক্ষমতা আসলে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের হাতে, এবং কিছু করতে হলে তাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে। অভ্যুত্থান সফল হতে হলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে পুরো রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু তাঁদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। এরদোয়ান মোবাইল ফোনে ভিডিও বার্তায় জনগণকে রাস্তায় নেমে অভ্যুত্থান প্রতিহত করার ডাক দিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই এরদোয়ানের সে বার্তা সিএনএন এর তুর্কী ভাষার নিউজ চ্যানেলে প্রচার হতে থাকে। আর মুহূর্তে মানুষ রাস্তায় নেমে পরেন সেনা হটাতে। অসংখ্য মুজাহিদরা সেনাবাহিনীর ট্যাংকের সামনে শুয়ে পরেন। কয়েক ঘন্টা পর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান যখন ইস্তাম্বুলের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরে এসে নামেন, পরিস্থিতি পুরো ঘুরে গেলো। সবাইকে রাস্তায় নামার ডাক দেন এরদোয়ান সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি কড়া ভাষায় অভ্যুত্থানকারীদের দেখে নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, তুরস্কের নিয়ন্ত্রণ তার হাতেই। সাথে সাথে মানুষের জোয়ার শুরু হয়ে যায় সেনা হাটাতে। ততক্ষণে অনেকের কাছেই পরিস্কার হয়ে গেল, অভ্যুত্থানকারীরা ব্যর্থ হয়েছে, সিনিয়র সেনা অধিনায়করা সরকারের পক্ষেই আছে। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীরা আত্নসমর্পণ করেন। লাখো মানুষের ভালোবাসা, একাগ্রতা আর বিশ্বাসের ফলশ্রুতিতে এরদোয়ানকে জয়ী করে। ব্যর্থ হয় বিদ্রোহী সেনারা। ইস্তাম্বুলের রুটি আর শরবত বিক্রেতা সেই ছোট্ট ছেলেটি আজ বিশ্ব নেতাদের আইডল। একটি জাতির চেঞ্জ মেকার। মজলুমদের আশ্রয়স্থল। যেখানে অন্যায়, মানবতার হরণ সেখানে প্রতিবাদী মুখ এরদোয়ান। সে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর তাঁকে তুরস্কের গন্ডি পেরিয়ে পরিণত করেছে বিশ্বের সকল মজলুম মানুষের বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে। তাইতো বলা যায় এরদোয়ান একটি নাম, একটি ইতিহাস, একটি জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্নদ্রষ্টা।

Continue Reading

বিনোদন

পৃথিবীর একমাত্র বায়োনিক চাইল্ড অলিভিয়া

মেয়েটির শরীরে নেই ব্যথা, ঘুম ও খিদে 😮

Published

on

By

bionic child olivia
Photo Credit:

তখন  মেয়েটির বয়স সবে সাত বছর। মায়ের সঙ্গে সে হাঁটতে বের হয়। তবে কিছুতেই  মায়ের হাত ধরবে না। নিজের খেয়াল মতো রাস্তা পার হতে গিয়ে ভয়ঙ্কর এক  দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সে। ছোট্ট শরীরটাকে ধাক্কা মারার পর ঠেলতে ঠেলতে ১০০  ফুট দূরে নিয়ে গিয়েছিলো একটি গাড়ি। ২০১৬ সালে ঘটানাটি ঘটে। পথচলতি লোকেরা  চিৎকার করে ওঠে। মাথা চাপড়াতে চাপড়াতে ছুটে যায় মেয়েটির মা। তিনি ও বাকি  সবাই নিশ্চিত ছিলেন যে, মেয়েটি আর বেঁচে নেই। তবে সবাইকে চমকে দিয়ে মেয়েটি  উঠে দাঁড়িয়ে মায়ের কাছে ফিরে আসে। তার মুখে একটুও ভয় বা আতঙ্ক নেই। মেয়ের  হাসিমুখের অভিব্যক্তি দেখে তার মায়ের মনে হচ্ছিল সে বলতে চাইছিলো,‘কী হয়েছে  এত চিন্তার কী আছে?’

ডাক্তারের  কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তার শরীরে কয়েকটি আঁচড়ের দাগ ছাড়া আর কিছু আঘাতের  চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পুরো শরীর স্ক্যান করেও ভেতরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া  যায়নি। ডাক্তাররা নিশ্চিত হলেন কোনো অবস্থাতেই মেয়েটি যন্ত্রণা অনুভব করে  না। শুধু ব্যথা নয় খিদে এমনকি ঘুমও আসে না তার। অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, সত্যিই  এমন এক মেয়ে আছে এই বিশ্বে। তার নাম অলিভিয়

২০০৯  সালে ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের কাছে হাডারফিল্ড নামের শহরের ফার্নসওয়ার্থ  নামক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গৃহকর্তা রিড, তার স্ত্রী নিকি ও তাদের  পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে গড়া সাধারণ মধ্যবিত্ত এক ব্রিটিশ পরিবার। পৃথিবীর  অধিকাংশ চিকিৎসক আজ এই পরিবারটিকে চেনেন। এর কারণ হলো তাদের দ্বিতীয় মেয়ে  অলিভিয়া।

১০  বছর বয়সী অলিভিয়া পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। অলিভিয়ার এমন তিনটি বৈশিষ্ট্য আছে যা  পৃথিবীতে আর কারও নেই। যা ওই অতি ক্ষুদ্র মেয়েটিকে করে তুলেছে অলৌকিক  ক্ষমতাসম্পন্ন। ছোট্ট অলিভিয়া দিনের পর দিন না খেয়ে, না ঘুমিয়ে থাকতে পারে  এবং যত বড় আঘাতই পাক না কেন অলিভিয়ার যন্ত্রণা লাগে না। ১০ বছরের জীবনে  একদিনও কাঁদেনি অলিভিয়া।

ফার্নসওয়ার্থ  পরিবারে দ্বিতীয় কন্যা ফুটফুটে অলিভিয়া। কয়েক মাসের মধ্যে বাবা-মা তাদের  মেয়ের অলিভিয়ার কাণ্ড দেখে আতঙ্কিত হলেন। ছুটলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারকে  বলেন, তাদের মেয়ে অলিভিয়া খিদে পেলে কাঁদে না, দিনে রাতে একদম ঘুমায় না,  কোনো ধরনের আঘাত পেলেও কাঁদে না। ডাক্তার হেসে দম্পতিকে আশ্বাস দিয়েছিলেন,  এটা স্বাভাবিক। আপনারা বেশি খাইয়ে দিচ্ছেন তাই ক্ষুধায় কাঁদছে না। আর ঘুমটা  নিয়ে সব বাবা-মা’র চিন্তা, ওটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। কিছুদিন পরেই ঠিক  হয়ে যাবে।

ধীরে  ধীরে বড় হয়েছে অলিভিয়া, মা-বাবা খিদের জ্বালায় মেয়ে কাঁদে না দেখে বাবা-মা  তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করতেন। অনেক চেষ্টার পরও অলিভিয়া যদিও  সামান্য কিছু খেতো, কিন্তু কখনো ঘুমোতে চাইতো না। সারাক্ষণ তাকে নিয়ে খেলতে  হতো। পরিবারের সবাই যখন ঘুমে মগ্ন থাকে অলিভিয়া তখন ছোট্ট পায় টলতে টলতে  সারা বাড়ি জুড়ে সারা রাত ধরে ঘোরাঘুরি করতো। বাধ্য হয়ে বাবা-মা রাতে শিশু  অলিভিয়াকে একটি খালি ঘরে খেলনা দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিতেন। তাদেরও তো ঘুমোতে  হবে, না ঘুমিয়ে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন।

ডাক্তার  বললেন, এক জটিল গঠনগত ত্রুটির শিকার হয়েছে অলিভিয়া। তবে এক বছরের মধ্যেও  অলিভিয়ার এই সব অভ্যাসের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাই অন্য এক ডাক্তারের কাছে  যান তার বাবা-মা। সব শুনে সেই ডাক্তার অলিভিয়াকে পাঠিয়েছিলেন একটি  ল্যাবরেটরিতে। সেখানে অলিভিয়ার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট নিয়ে  ডাক্তারের কাছে যান তার বাবা-মা। রিপোর্টটি দেখে ডাক্তারের মুখ বিমর্ষ হয়ে  যায়। সে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ফোন করেন। এরপর ডাক্তার রিপোর্টটি পাঠিয়েছিলেন  পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে।

কয়েকদিন  পর অলিভিয়ার বাবা-মাকে ডাক্তার বলেন, আসলে অলিভিয়া ক্রোমোজোম সিক্স পি  ডিলেশন নামক একটি জটিল গঠনগত ত্রুটির শিকার। তাই অলিভিয়ার ক্ষুধা ও ঘুম পায়  না। অলিভিয়ার বাবা-মাকে ডাক্তার বলেছিলেন, এ রোগের কোনো ওষুধ নেই।  অলিভিয়াকে বাঁচাতে গেলে তাকে সময়ে সময়ে খাইয়ে দিতে হবে, কিন্তু ঘুমের জন্য  কিছু করতে পারবো না। কারণ এইটুকু মেয়েকে ঘুমের ওষুধ দেয়া যাবে না। যেহেতু  না ঘুমিয়েও সে সুস্থ আছে তাহলে সেভাবেই তাকে থাকতে দিন। কী এই ক্রোমোজোম  সিক্স পি ডিলেশন? মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় ভ্রুণের কোষগুলো বারবার বিভাজিত  হয়ে নতুন কোষ তৈরি করতে থাকে, ফলে গর্ভস্থ সন্তানের দেহে কোষের সংখ্যা  দ্রুত ও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অলিভিয়া যখন মায়ের পেটে বেড়ে উঠছিলো, তার  কোষের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছিলো।

তবে  বিভাজনের ত্রুটির জন্য অলিভিয়ার দেহের কোষগুলোতে সিক্স পি নামক ক্রোমোজোম  উপাদানটি ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই ভূমিষ্ঠ হয় অলিভিয়া। তবে কোষের ত্রুটি  স্থায়ীভাবেই থেকে গিয়েছিলো অলিভিয়ার দেহে। অলিভিয়ার দেহ থেকে সিক্স পি নামক  ক্রোমোজোম মুছে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অলিভিয়ার খিদে, ঘুম এবং ব্যথা পাওয়ার  অনুভুতিও তার জীবন থেকে মুছে যায়।

অপমান  করলে ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয় অলিভিয়া। ডাক্তারের কথা মতো, অলিভিয়ার বাবা-মা  মেয়েকে বড় করতে থাকেন। তারপর অলিভিয়া স্কুলে ভর্তি হয়। দিন-রাত জেগে থেকেও  স্কুলের মেধাবী ছাত্রী সে। পরীক্ষায় অলিভিয়ার নাম্বার সবচেয়ে বেশি থাকে।  খেলাধুলাতেও সে স্কুলে পিছিয়ে থাকে না। তবে শান্ত ও হাসিখুশি অলিভিয়ার  একটাই দোষ, কেউ তাকে অপমান করলে সে ভয়ঙ্কর উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তখন অলিভিয়া  আক্রোশবশত কোনো জিনিস দিয়ে আঘাত করে সেই মানুষটিকে বা নিজের মাথা দেওয়ালে  ঠোঁকে।

সাইকোলজিস্ট,  সাইক্রিয়াটিস্ট কিছুই বাদ দেননি অলিভিয়ার বাবা-মা। কিন্তু তারা  বলেছিলেন,তাদের কিছু করার নেই। এসব হচ্ছে অলিভিয়ার ক্রোমোজোমের গঠনগত  সমস্যার উপসর্গ। ওষুধ দেয়া যাবে না কারণ অলিভিয়া ওইটুকু সময় বাদ ছাড়া বাকি  সময় সম্পূর্ণ সুস্থ ও হাসিখুশি থাকে। ধরা পড়েছিল অলিভিয়ার আরেক অস্বাভাবিক  বৈশিষ্ট্য রোজ বিকেলে বাড়ির সামনের পার্কে তার ভাই-বোনদের সঙ্গে খেলা করতে  যেতো অলিভিয়া। একদিন অলিভিয়া একা গিয়েছিলো পার্কে।

সেখান  থেকে ফেরার পর অলিভিয়াকে দেখে আতঙ্কে চেঁচিয়ে উঠেছিলেন মা নিকি। অলিভিয়ার  নিচের ঠোঁটের অর্ধেকটা কেটে ঝুলছিল। জামা রক্তে ভেজা, কিন্তু অলিভিয়ার মুখে  হাসি। আতঙ্কিত মায়ের পাশ দিয়ে ঘরে ঢুকে জুতো খুলতে শুরু করেছিলো অলিভিয়া।  মুখে একটুও ব্যথার অভিব্যক্তি ছিল না তার।

হাসপাতালে  ভর্তি করতে হয়েছিল অলিভিয়াকে, প্রথমে স্টিচ ও পরে প্লাস্টিক সার্জারি করা  হয়। পুরো সময়টিতে একটু কাঁদেনি অলিভিয়া। হাসিমুখে ইনজেকশনের পর ইনজেকশন  নিয়েছিলো। ডাক্তাররা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ‘ইস্পাত’ কঠিন মানসিকতার মেয়েটিকে  দেখে। তারপরে অসংখ্য বার আঘাত পেয়েছে অলিভিয়া। কিন্তু তার মুখ থেকে একবার  ‘আহ” শব্দটিও বের হয়নি।

অলিভিয়া  পৃথিবীর একমাত্র ‘সুপার হিউম্যান’ এই দুর্ঘটনার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের  ডাক্তারদের সঙ্গে অলিভিয়ার ডাক্তারদের ফোন এবং ই-মেল চালাচালি এবং  পৃথিবীব্যাপী সার্ভে রিপোর্টের আদানপ্রদান শুরু হয়েছিলো। কিছুদিন পরে এই  বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা অলিভিয়াকে পৃথিবীর প্রথম ‘বায়োনিক চাইল্ড’ ঘোষণা  করেছিলেন। এর অর্থ হলো অলিভিয়া অস্বাভাবিক ক্ষমতাযুক্ত একটি শরীর ও মন নিয়ে  জন্মেছে, এই পৃথিবীতে অলিভিয়ার মতো সহ্যশক্তি আর কারো নেই।

অলিভিয়া  কয়েকমাস না ঘুমিয়ে, কয়েক সপ্তাহ না খেয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে, আর  তার শরীর যেকোনো আঘাত ও যন্ত্রণা সহ্য করতে পারে ঠিক রোবটের মতো। এই তিনটি  বৈশিষ্ট্য সম্মিলিতভাবে বিশ্বে আর কোনো মানুষের দেহে কখনো দেখা যায়নি। সারা  পৃথিবী তন্ন তন্ন করে খুঁজে আজ অবধি ১০০ জনকে পাওয়া গেছে যাদের সিক্স পি  নামক ক্রোমোজোম ব্যাধিগ্রস্ত আছে। কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে  অলিভিয়াই প্রথম মানুষ যার শরীরে কোন ব্যথা, ঘুম,ক্ষুধা নেই এই তিনটি  উপসর্গই আছে। ভাবলেই অবাক লাগে শারীরিক ত্রুটি আজ লৌহমানবী অলিভিয়াকে বিশ্ব  বিখ্যাত করে তুলেছে। করে তুলেছে বিশ্ব ইতিহাসের প্রথম সুপার হিউম্যান।

~সংগৃহীত

Continue Reading

খেলাধুলা

কি কি থাকছে ফিফার নতুন নিয়মে?

Published

on

By

ফিফার নতুন নিয়ম

বদলে যাচ্ছে ফুটবলের নিয়ম। খেলাটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে ৯০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। থাকবে ইচ্ছেমতো ফুটবলার পরিবর্তনের সুযোগ। হলুদ কার্ড দেখলে সাসপেন্ড হবেন খেলোয়াড়রা, সাইডলাইনে বসে থাকতে হবে ৫ মিনিট। এমন বেশকিছু নতুন নিয়ম অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টুর্নামেন্ট ফিউচার অব ফুটবল কাপে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবর্তন করেছে ফিফা। এখনো কিছু চূড়ান্ত না হলেও এরই মধ্যে ভক্তদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুতেই এসেছে পরিবর্তন। খেলাধুলাও এর বাইরে নয়। দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত কত কিছুই না করছে খেলার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো।

টি-২০ ফরম্যাট বিশ্ব ক্রিকেটে যোগ করে নতুন মাত্রা। এবার ফুটবলও সে পথে হাঁটছে। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবলে নতুন কিছু সংযোজনের ক্ষমতা আছে শুধু তাদেরই। ফুটবলকে আরও আকর্ষণীয় করতে বেশকিছু নিয়মে পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে তারা।

ইউরোপের চারটি ক্লাব পিএসভি, আজেড আল্কমার, লাইপজিগ ও ক্লাব ব্রুজের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের একটি টুর্নামেন্ট চলছে। ফিউচার অব ফুটবল কাপ নামে সেই টুর্নামেন্টে কিছু নিয়মে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবর্তন এনেছে ফিফা। এমন খবর দিয়েছে ইউরোপের বেশকিছু সংবাদমাধ্যম। যদিও ফিফার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানানো হয়নি। তবে খবর প্রচারের পর তা নিয়ে কোনো আপত্তিও জানায়নি ফিফা।

নতুন সেই নিয়মগুলো কি? সবার আগে খবরটি প্রচার করে খেলাধুলাবিষয়ক স্পেনের শীর্ষ পত্রিকা মুন্ডো দেপোর্তিভো। তারা বলছে, প্রস্তাবিত নিয়মে ৯০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। প্রতি অর্ধে খেলা হবে ৩০ মিনিট। থ্রো ইন হবে পা দিয়ে। কোনো ফুটবলার হলুদ কার্ড দেখলে সাসপেন্ড হবেন ৫ মিনিটের জন্য, বসে থাকতে হবে সাইডলাইনে। ম্যাচ চলাকালীন ফুটবলার পরিবর্তনে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না। আর বল মাঠের বাইরে গেলে বা খেলা বাধাগ্রস্ত হলে বন্ধ থাকবে ঘড়ি।

নতুন এ নিয়মগুলো এরই মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে দর্শক-সমর্থকের মাঝে। তাদের অধিকাংশই এই নিয়মগুলোর সমালোচনা করে বলছেন, এখন যে নিয়মে খেলা চলছে সেটাই আদর্শ।

Continue Reading

আন্তর্জাতিক

অবশেষে বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুললেন : বিল গেটস

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিচ্ছেদের তকমা পাওয়া এই বিচ্ছেদের জন্য নিজেকেই দায়ী করেছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা

Published

on

By

bill gates divorce
Photo Credit:

অবশেষে বিচ্ছেদ নিয়ে মুখ খুলেছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী বিল গেটস। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিচ্ছেদের তকমা পাওয়া এই বিচ্ছেদের জন্য নিজেকেই দায়ী করেছেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা।

গত সপ্তাহে শীর্ষ ধনীদের নিয়ে আয়োজিত এক গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে এ নিয়ে তিনি কথা বলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলার সময় বিল গেটস রীতিমতো ভেঙে পড়েছিলেন বলে ওই ক্যাম্পে অংশ নেওয়া একজন দাবি করেছেন। এমনকি এ নিয়ে কথা বলার সময় গলা ধরে আসে তার।

ক্যাম্পে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি নিউ ইয়র্ক পোস্টকে জানিয়েছেন যে, বিল গেটস বিচ্ছেদের জন্য নিজেকেই দায়ী করেন। তিনি এটা (বিচ্ছেদ) নিয়ে কথা বলার সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এমনকি তার গলাও ধরে আসে।

ওই ক্যাম্পে ‘অফ দ্য রেকর্ড’ প্রশ্নত্তোর পর্বে সিএনবিসি হোস্ট বেকি কুইক বিল গেটসকে বিচ্ছেদের পর গেটস ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন করলে এসব কথা বলেন তিনি।

চলতি বছরের ৪ মে ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানার ঘোষণা দেন এই দম্পতি।

বিল গেটস ও মেলিন্ডার সম্পর্কের শুরুটা ছিল পেশাভিত্তিক। ১৯৮৭ সালে প্রোডাক্ট ম্যানেজার হিসেবে মাইক্রোসফটে যোগ দিয়েছিলেন মেলিন্ডা। এরপর দুজনের মধ্যে জানাশোনা শুরু হয়।

এরপরের গল্প দুজনের সামনে এগিয়ে যাওয়া। শুরু হয় দুজনের চুটিয়ে প্রেম। নেটফ্লিক্সে প্রচারিত এক তথ্যচিত্রে বিল গেটস বলেছেন, আমরা একে অপরের খুব খেয়াল রাখতাম। এখানে দুটি সম্ভাবনা ছিল। হয় আমাদের প্রেমে বিচ্ছেদ হবে, নয়তো আমাদের বিয়ে করতে হবে।

মেলিন্ডা বলেন, তিনি বিল গেটসকে একজন সুশৃঙ্খল মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন। এমনকি তাকে বিয়ে করার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিও দিয়েছিলেন বিল—এমনটাই জানিয়েছিলেন মেলিন্ডা।

এরপর প্রেম আরও গভীর হয়েছে। প্রেম শুরুর সাত বছর পর ১৯৯৪ সালে তারা এক ছাদের নিচে থাকার সিদ্ধান্ত নেন।

Continue Reading

Trending

%d bloggers like this: